বিশেষ প্রতিবেদকঃ
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেসরকারী এনজিও ব্র্যাক এর C4D প্রকল্পে বহিরাগ টিমলিডার ও সেক্টর স্পেশালিস্টের হাতে চাকুরি হারিয়েছে অর্ধশত স্থানীয় যুবক-যুবতি। ব্র্যাকের সিফোরডি প্রকল্পের টিম লিডার বহিরাগত শামিম ইফতেখার তার শালি একই প্রকল্পের সেক্টর স্পেশালিস্ট জান্নাতুল কোবরা পরিকল্পিতভাবে স্থানিয়দের চাকুরীচ্যুত করেছে। স্থানীয়দের স্থলে শালি-দুলাভাই মিলে তাদের আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতদের চাকুরি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সিফোরডি প্রকল্পে শুরু থেকে শতাধিক স্থানীয় তরুণ তরুনী কাজ করতো। এই প্রকল্পের টিম লিডার হলেন রংপুরের বাসিন্দার শামিম ইফতেখার। কিছুদিন আগে টিমলিডার শামিম ইফতেখার তার আপন শালিক্যাকে প্রকল্পটির সেক্টর স্পেশালিস্ট পদে নিয়োগ দেয়। এর পর থেকেই শুরু হয় স্থানিয়দের ছাটাইয়ের ষড়যন্ত্র।
চাকুরিচ্যুত হওয়া স্থানিয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘ এক বছর ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করা স্থানীয়দের পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর নোটিশ দেয় ব্রাক। পরীক্ষায় পাশ নাকরার অযুহাতে স্থানীয়দের চাকুরীচ্যুত করে কোন ধরনের অভিঙ্গতা না থাকার বহিরাগতদের চাকুরী দেয় ব্র্যাকের সিফোরডির টিম লিডার শামিম ইফতেখার ও সেক্টর স্পেশালিস্ট জান্নাতুল কোবরা।
চাকুরী হারানো স্থানীয়রা আরো জানিয়েছে, পরীক্ষা ছাড়াও প্রতিমাসে বিভিন্ন অভিযোগ এনে স্থানীয়দের চাকুরী থেকে ছাটাই করা হয়। এমনকি শালিকা ও দুলাভাই মিলে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করে তা স্থানীয়দের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। অর্থ আত্মসাৎএর মিথ্যা অভিযোগ এনেও স্থানিয়দের চাকুরীচ্যুত করা হচ্ছে।
ব্র্যাকের সিফোরডি প্রকল্পের সেক্টর স্পেশালিস্ট জান্নাতুল কোবরা স্বীকার করেছেন তার বস ও টিম লিডার শামিম ইফতেখার তার আপন দুলাভাই। তবে ব্যাক্তিগত সম্পর্ক তাদের চাকুরী ক্ষেত্রে কাজ করেনা বলে তিনি জানান।
জান্নাতুল কোবরা তার প্রকল্পে স্থানীয়দের চাকরি হারানোর জন্য স্থানিয়দের অযোগ্যতাকেই দায়ী করেছেন। তিনি জানান, মেধা জাচাই পরীক্ষায় যারা ফলাফল ভালো করেনি তাদের চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। পরীক্ষা নেয়াটাই ব্র্যাকের একটি কৌশল বলেও তিনি জানান।
এক বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করা স্থানিয়দের চেয়ে অনভিজ্ঞ বহিরাগত, যারা রোহিঙ্গাদের ভাষা বোঝেনা তারাই কিভাবে চাকরি পেলো এমন প্রশ্নের জবাবে জান্নাতুল কোবরা বলেন, এই ব্যাপারে ব্রাকের সিনিয়র নিতিনির্ধারকরা ভালো বলতে পারবে।
এই ব্যাপেরে ব্রাকের “সিফোরডি” প্রকল্পের টিম লিডার শামিম ইফতেখার জানিয়েছেন, ব্রাকে কাউকে চাকরি দেয়া বা চাকরিচ্যুত করা মানবসম্পদ বিভাগের কাজ। স্থানিয়দের চাকরিচ্যুত করা বা ব্যাপারে তিনি বা তার শ্যালিকা জড়িত নয়।
শামিম ইফতেখার আরো বলেন, স্থানিয়দের চাকরির আন্দোলনকে ভিত্তিহীন বলে আক্ষা দেন। এই আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য নিয়েও তিনি কুরুচিপূর্ণ কথা বলেন।
এই ব্যাপেরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানিয়দের অধিকার নিয়ে কাজ করার ইমরুল কায়েস জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেসকল এনজিও স্থানীয়দের চাকরিচ্যুত করেছে তারমধ্যে ব্র্যাকের বিরুদ্ধেই বেশি অভিযোগ এসেছে। ব্র্যাক এখনো পরীক্ষার নামে স্থানীয়দের ছাটাই করে অনভিজ্ঞ বহিরাগতদের নিয়োগ দিচ্ছে। স্থানীয়দের চাকুরিচ্যুত করতে থাকা ব্র্যাকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি তিনি আহবান জানান। সিবিএন
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-