শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের হোয়াইক্যং রেঞ্জাধীন উখিয়া মনখালী বিটের সামাজিক বনায়নের অগ্নি সংযোগের পাশাপাশি গাছ ও পাহাড় কাটছে দেদারছে। আগুনে পুড়ে ও কেটে সাবাড় করায় অন্তত অর্ধকোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার বিকালে বনবিট কর্মকর্তা, সামাজিক বনায়নের অংশীদার ও স্থানীয় ইউপি সদস্যরা ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন।
জানা যায়, মনখালী বনবিটের আওতায় ২০১১ সালে সামাজিক বনায়ন সৃজন করা হয়। উক্ত বনায়ন প্রায় পরিপূর্ণতা পায়। উক্ত বিটের আওতায় চেপটখালী ঘোনার মুখের পূর্ব পাশে (বড়ছড়ার মাঠ) প্রায় ৫ একর সামাজিক বনায়ন স্থানীয় মো. হাশেম নামের এক ব্যক্তির দখলে ছিলো।
অভিযোগ উঠেছে, চেপটখালী এলাকার বাসিন্দা মৃত সালেহ আহম্মদ এর ছেলে হেডম্যান মোস্তাক আহম্মদ ও তার ভাই আব্দল আজম প্রকাশ আবদু এর নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট উক্ত সামাজিক বনায়ন টেকনাফের লেংগুর বিলের জনৈক সামশুল আলম, আবদুর রহিম, রুপতি গ্রামের নুরুল ইসলাম ও চেপটখালীর আবুল হোছনকে ১৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এই বনায়নে গত শুক্রবার অগ্নিসংযোগ করা হয়। এছাড়াও ব্যাপক হারে গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে এবং নির্বিচারে পাহাড়ও কেটেছে। গত শুক্রবার বনায়নে আগুন, গাছ কেটে সাবাড় করায় এবং পাহাড় কাটা ফলে অন্তত অর্ধকেটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
আরো জানা গেছে, বনায়নের ক্ষয়ক্ষতি পরির্দশনের জন্য গত শনিবার ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন মনখালী বনবিট কর্মকর্তা মনজুরুল আলম চৌধুরী, জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য মোজাম্মেলক, ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ মুছা ও সামাজিক বনায়নের অংশীদারগন। পরির্দশন কালে তারা ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন বলে জানান স্থানীয় বিটকর্মকর্তা মনজুর আলম চৌধুরী ও ইপি সদস্য মোজাম্মেল হক।
মনখালী বিটের সামাজিক বনায়নে আগুন, গাছ কেটে সাবাড় ও নির্বিচারে পাহাড় কাটার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা সরজমিনে ঘটনাস্থল পরির্দশন করে বিষয়টি কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরকে অবহিত করেছি। বনায়নে অগ্নিসংযোগ, গাছ ও পাহাড় কাটার ঘটনায় অন্তত অর্ধ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ডিএফও হুময়াুন কবির বলেছেন, ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মনখালী বনবিট কর্মকর্তা মনজুরুল আলম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এব্যাপারে দায়ী মোস্তাক আহম্মদ, তার ভাই আব্দল আজম প্রকাশ আবদু ও মো. হাশেমসহ অন্যান্যদের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হুমায়ুন করিব এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মনখালী বনবিটের অধীনে সামাজিক বনায়নে অগ্নিসংযোগের ঘটনা পুরোপুরি অস্বীকার করে বলেন, উক্ত বিটের অধীনে আকাশ মনি বনায়নে কিছু জায়গায় একটি পরিবার থাকতো। পরে ওই পরিবার অন্যত্র চলে যান। যাওয়ার সময় ওই জায়গাটি অন্য একজন ব্যক্তিকে দিয়ে যান। এই ব্যক্তি বনায়ন পরিস্কার করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় বনবিট কর্মকর্তা, ইউপি মেম্বার ঘটনাস্থল পরির্দশনের নির্দেশ দেয়া হলে তারা ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে। যারা বাগান কেটেছে বা মাটি কর্তনে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে মনখালী বিট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-