রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানের সয়লাবঃ দূর্ঘটনার আশংকা

কায়সার হামিদ মানিক উখিয়া ::
প্রশাসনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গড়ে উঠেছে হাজারো অধিক গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান। গ্যাস সিলিন্ডার রক্ষনাবেক্ষন, বাজারজাত করন ও ব্যবহার সম্পর্কে অনভিজ্ঞ রোহিঙ্গারা এসব গ্যাস সিলিন্ডার উখিয়া কোটবাজারস্থ অনুমোদিত পাইকারী ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে সহজ উপায়ে সরবরাহ নিয়ে ক্যাম্পে বিক্রি করছে। অসাবধানতা অবলম্বনের কারনে এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে যে কোন সময়ে বড় ধরনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ ও বিক্রয়ের জন্য বিস্ফোরক অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিসসহ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাদকতা রয়েছে। তা অমান্য করে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করার অপরাধে অগ্নিপ্রতিরোধক নির্বাপক আইন ২০০৩ এর ১৭ নাম্বার ধারা (৪ নং ) ধারা ভঙ্গের কারনে ৩ বছরের কারাদন্ড যাবতীয় মালামাল বাজেয়াপ্ত করার বিধান রয়েছে।

সরজমিন উখিয়ার কুতুপালং, লম্বাশিয়া,মধুরছড়াসহ বেশ কয়েকটি ক্যাম্প ঘুরে দেখা যায়, হাজারো অধিক গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান। এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির বৈধতা আছে কিনা জানতে চাওয়া হলে রোহিঙ্গা গ্যাস সিলিন্ডার দোকান মালিক আবুল শমা (২৮) জানান, ক্যাম্পে জ্বালানি সংকটের সৃষ্টি হলে এনজিওরাই প্রথমে গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করে। পরবর্তীতে গ্যাস সিলিন্ডারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারনে ক্যাম্পে তার মত আরো অসংখ্য গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান গড়ে উঠেছে বলে ওই রোহিঙ্গা জানান।

সে জানান, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করতে যে লাইসেন্স নিতে হয় তা তারা জানেনা। পার্শবর্তী আরেকটি দোকানে গিয়ে দেখা যায়, উপরে পলিথিনের ছাউনির নিচে বালির উপর গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য মজুদ রাখা হয়েছে। গ্যাস সিলিন্ডারের উপর হাত দিয়ে দেখা যায় প্রচন্ড গরম অনুভব করা গেল। প্রচন্ড তাপমাত্রায় এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে হতাহত ও অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হতে পারে। এমন প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গা ব্যবসায়ী জয়নাল জানান, তারা এভাবে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে এখানে আসার পর থেকে, কোন দিন অঘটন ঘটেনি।

অবৈধ ভাবে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউস ইন্সপেক্টর মোঃ শাহজান জানান, রোহিঙ্গারা স্থানীয় ডিলারদের থেকে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে ক্যাম্পে বিক্রি করছে। স্বাভাবিগত কারনে রক্ষনাবেক্ষনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকায় এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরন হয়ে বড় ধরনের অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। পাশাপাশি ট্রেডলাইসেন্স, বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস এখাতে সরকার প্রচুর পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, যেনতেন ভাবে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় ও রোহিঙ্গা ব্যবসায়ীদের সরবরাহকারী ডিলারদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর