কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসন

আ.লীগের ফরম নিলেন বদি, তার শ্যালক, স্বামী-স্ত্রীসহ ২১ প্রত্যাশী

আজিম নিহাদ,সিভয়েস :

নির্বাচনী হাওয়া শুরু হতেই সীমান্তের সংসদীয় আসন উখিয়া-টেকনাফে সবচেয়ে বেশি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী দেখা যায়। সেই সংখ্যাটা যে ২১ জনে গিয়ে দাঁড়াবে, তা কেউ কল্পনাও করেননি। কিন্তু এখানেই শেষ নয়; এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

সারাদেশের সবচেয়ে আলোচিত এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী, আপন দুই ভাই, এমনকি দুলাভাই-শ্যালকও রয়েছেন। বলা চলে, ঘরে ঘরে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্যে ‘নৌকা’ জুটে সেটা সময় বলে দেবে।

আলোচিত এই আসনে যে ২১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন, তৎমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ীও রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তালিকাভুক্ত ইয়াবা ও মানবপাচারের গডফাদারের হাতে দলীয় মনোনয়ন ফরমসহ ছবি ছড়িয়ে পড়ায় তুমূল সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিষয়টিকে কেউ কেউ ব্যঙ্গ করে নানা মন্তব্য করছেন।

জানা গেছে, উখিয়া-টেকনাফ আসনে গতকাল শনিবার পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সাংসদ আব্দুর রহমান বদি, তাঁর (বদির) আপন শ্যালক ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা মাহমুদুল হক চৌধুরী এবং তার স্ত্রী জেলা পরিষদের সদস্য আশরাফ জাহান কাজল, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী উখিয়া উপজেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী নিগার সুলতানা, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর, আওয়ামী লীগ নেতা শফিক মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সোনা আলী, টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মৌলানা রফিক উদ্দিন ও তাঁর আপন ভাই টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৌলানা আজিজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় তাঁতী লীগের কার্যকরী সভানেত্রী সাধনা দাশ গুপ্তা, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমেদ বাহাদুর, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী আহমেদ, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমিনুল হক আমিন, আওয়ামী লীগ নেতা আবুল মনসুর চৌধুরী, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহির হোসেন, অর্থ-সম্পাদক রশিদ আহমেদ ও টেকনাফ উপজেলা ওলামা লীগ সভাপতি ফরিদুল আলম। এরমধ্যে অনেকে জমাও দিয়ে ফেলেছেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারীদের মধ্যে বর্তমান সাংসদ আব্দুর রহমান বদি, টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলম, ভাইস চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ও তার ভাই বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিনের নাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ইয়াবা গডফাদারের তালিকায় রয়েছে।

এই আসনে প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হলেও জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রয়েছে বর্তমান সাংসদ আবদুর রহমান বদি। আওয়ামী লীগ থেকে বদিকেই আবারও মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। কারণ এই আসনে বিএনপির শক্তিশালী একক প্রার্থী রয়েছে। বিএনপির চার বারের নির্বাচিত সাবেক সাংসদ শাহজাহান চৌধুরীকে পরাজিত করে ২০০৮ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন আবদুর রহমান বদি। এই জয়ের ধারাবাহিকতা রেখেছেন তিনি।

২০১৪ সালেও জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন বদি। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে বদ্ধ পরিকর বদি। এবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হলে টানা সাংসদ হওয়ার ‘হ্যাট্রিক’ করবেন আবদুর রহমান বদি।

আরও খবর