এম. আমান উল্লাহ, কক্সবাজার :
যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়নে পাল্টে যাচ্ছে কক্সবাজার জেলার গ্রামীণ জনপদের জীবনযাত্রা, বিকশিত হয়েছে অর্থনীতির চাকা। উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখছে কক্সবাজার জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষগুলো। গত ১০ বছরে কক্সবাজার জেলার প্রায় ১৪শ’ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কের সংস্কার, মেরামত ও পুনঃ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কক্সবাজার কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০০৯ সালের পর থেকে গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। গত দশ বছরে ১২টি খাতের উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে ৬শ’ কোটি টাকা।
কক্সবাজার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মীর্জা ইফতেখার আলীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে কক্সবাজার জেলার ৮টি উপজেলা এবং ৭১টি ইউনিয়নে এই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। যার ফলে বদলে যাচ্ছে গ্রাম অঞ্চলের অবস্থান। সড়ক, ব্রীজ, হাটবাজার, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা কমপ্লেক্স, পানি সম্পদ উপ-প্রকল্প, সাইক্লোন সেল্টার, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অস্বচ্ছল ও ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধার বাসস্থান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণসহ এই উন্নয়ন কর্মকান্ড হয়েছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, গত ১০ বছরে সড়ক উন্নয়নে সব থেকে বেশি ব্যয় হয়েছে। উপজেলা, ইউনিয়ন এবং গ্রাম সড়ক উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকা। এরমধ্যে উপজেলা সড়কে ১শ’ ২০ কোটি, ইউনিয়ন সড়কে ১শ’ কোটি এবং গ্রাম সড়কে প্রায় ১শ’ ১০কোটি টাকা। এসময়ে কক্সবাজারে প্রায় ১ হাজার ৪শ’ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন হয়েছে। একইসাথে ১২১টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ, গ্রোথ সেন্টার ও গ্রামীণ হাটবাজার ৩৫টি, ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের ৪৮টি ভবন, উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন ২টি এর মধ্যে আরো ৩টি নির্মাণাধীন, বৃহৎ সেতু নির্মাণ ৪টি, আরো ২টি নিমার্ণাধীন, জেটি নির্মাণ ৭টি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিক্ষা অবকাঠামো ৫৮৪টি, স্লুইস/রাবার ড্যাম/রেগুলেটর ২৩টি, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ২টি আরো ২টি নিমার্ণাধীন, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা নিবাস ১১টি।
এ ব্যাপারে স্থানীয়রা বলেন, বর্তমান সরকারের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে কক্সবাজার এলজিইডি অফিসের গৃহীত কর্মসূচিগুলো জনবান্ধব ও উন্নয়নমূখী। এতে করে কক্সবাজার জেলার জীবনমান উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে।
কুতুবদিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা বড়ঘোপ ইউনিয়নের বাসিন্দা মোহাম্মদ সাঈদী জানান, আমাদের জেলা সদরের সাথে এক মাত্র যোগাযোগ মাধ্যম নদীপথ। জেটি দিয়ে যাতায়তে ব্যাপক দূর্ভোগ পোহাতে হত। এখন সংস্কারের ফলে আমাদের আর কোন দূর্ভোগ নেই। এছাড়াও সড়ক যোগাযোগ ভাল হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ কমেছে।
এ বিষয়ে এলজিইডি কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর্জা ইফতেখার আলী বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতিকে সবল করতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল করার বিকল্প নেই। বর্তমান সরকারের সেই উদ্যোগকে আমরা বাস্তবায়ন করেছি। একেবারে প্রত্যন্ত এলাকাতেও মানুষ যাতে সহজে যেতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করেছি এবং চলছে। চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে গ্রামের মানুষের জীবন আরও সহজ হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-