তারকা হোটেল ওশানের জমকালো ইফতার পার্টির অতিথি শতাধিক এতিম শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :কক্সবাজারের একাধিক হেফজ ও এতিমখানার এতিম শিক্ষার্থীদের সৌজন্যে জমকালো ইফতার পার্টির আয়োজন করেছে সমুদ্রপারের তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেড (হোটেল এন্ড রিসোর্ট) কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় হোটেলের শাহসুজা হল রুমে আয়োজিত ইফতার পার্টিতে সুবিধাবঞ্চিত এতিম শতাধিক শিশু-কিশোর কোরআন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এতিম অতিথিদের দেখভাল করেন হোটেলের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু। এতে অতিথি ছিলেন, হোটেল চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মেজর (অব.) সিকদার।

হোটেল পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, সিয়াম সাধনার এ মাস আমাদের বৈষম্যহীনতার শিক্ষা দেয়। কিন্তু রোজার শেষ দিকে আমাদের কওমী মাদ্রাসা, হেফজ ও এতিমখানা গুলোতে এক করুন দৃশ্য দেখা যায়। সাধারণত ২৫ রোজা থেকে এসব প্রতিষ্ঠানে ছুটি হলে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাচ্চাদের বাসায় নিয়ে যান। কিন্তু একদল বাচ্চাকে নিতে কেউ আসে না। এদের কারো বাবা-মা, কারো বাবা নেই- মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেছে। অনেকের মা নেই, বাবা বাচ্চার খোঁজ রাখে না। এদের মাঝে যারা ভাগ্যবান তাদের অন্য স্বজনরা এসে কাউকে কাউকে নিয়ে যায়। আর বাকীরা সারাদিন নিরবে কাঁন্দে। প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলে কোলাহলে তারা শূণ্যতা অনুভব করে না বলে, কাঁদে না। কিন্তু সহপাঠীরা যখন স্বজনদের সাথে বাসায় যায় অথচ তাদের কেউ নিতে আসে না তখনই তাদের ছোট্ট মনে ‘এতিমতার’ বেদনা শুরু হয়।

মিশু আরো বলেন, ছোট বেলা হতেই এলাকার আশপাশে এসব কাছ হতে দেখার সুযোগ হয়েছে, তাই নিরবে এ শ্রেণীর শিশুদের খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করে আসা। নানা দয়ালো মানুষের সহযোগিতায় এতিমখানায় কমবেশি স্বাভাবিক ইফতার অধিবাসীরা করে। কিন্তু দামি হোটেলগুলোতে তাদের যাবার বা খাবারের সুযোগ কখনো হয়ে উঠে না। আমরা সারাবছর পর্যটন সেবা দিই। রোজায় পর্যটক কম থাকার সুযোগে আশপাশের হেফজ ও এতিমখানার শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের পর্যটকদের মতোই কর্পোরেট ইফতারের অতিথি করে আসছে ওশান প্যারাডাইস লিমিটেড। হোটেলটি চেয়ারম্যান এম. এন করিমের নির্দেশে দীর্ঘ একযুগ ধরে এ ধারা নিরবে চলে আসছে। শুধু ইফতার নয়, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাতেও শতাধিক এতিম শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী হোটেলে অতিথি হিসেবে নিমন্ত্রণ পেয়ে থাকে। বিরিয়ানি-পুলাওসহ নানা অভিজাত খাবারের স্বাদ দেয়ার চেষ্টা করা হয় এতিম শিশু-কিশোরদের। সবার এটা মনে রাখা দরকার, আজ আপনি বেঁচে না থাকলে কাল, আপনার ছোট সন্তান এতিম হিসেবেই গণ্য!

অনুষ্ঠানের একাধিক খুদে অতিথি জানায়, গত ১৭টি রমজানে চনা-মুরি-শরবত খেয়ে ইফতার সেরেছি। আজকে মাটন হালিম, ফিরনি, পুড়িং, জিলাপি, খেজুর, মিষ্টি, আপেল, মালটা, চনা, পিয়াজু, মরিচ্চা, বেগুনি, ফলের শরবত, দইয়ের মাঠায় ইফতারির পর মাগরিব নামাজ শেষে বিফ বিরানি খেয়েছি। কোরবানির ঈদেও আমরা এখানে গরুর মেজবান খেয়েছি। ওনারা আমাদের মতো এতিমদের যেভাবে মূল্যায়ন করে আসছেন, আল্লাহপাক ওনাদেরও সেভাবে প্রতিদান দিবেন।

ইফতার পার্টিতে এইচআর ব্যবস্থাপক মাহবুব ইসলাম, হিসাব বিভাগ প্রধান মোহাম্মদ আলমগীর, বিপনন বিভাগের ব্যবস্থাপক ইমতিয়াজ নুর সুমেল, সুমন, প্রকৌশলী আরাফাত, হাউস কিপিং ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হোসাইন, ফুডস এন্ড বেভারেজ ব্যবস্থাপক সিরাজুল ইসলাম, এক্সিকিউটিভ সেফ্ আবু নাছের চৌধুরী, জনসংযোগ কর্মকর্তা সাংবাদিক সায়ীদ আলমগীর, আইটি বিভাগের কর্মকর্তা জিসান, ফ্রন্ট অফিস সুপারভাইজার আদিলসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মজীবিগণ অতিথিদের সেবা দিয়েছেন। ###

আরও খবর