ধর্ম ডেস্ক :

কর্মব্যস্ততার মাঝেও প্রতিদিন যে ৪ আমলের পরিকল্পনা রাখবেন
সবার প্রতিটি দিন কাটে ব্যস্ততায়। একেবারে শিশুরা ছাড়া সবারই দিন শুরু হয় ব্যস্ততায়। কেউ স্কুলে যায়, কেউ অফিস আদালতে, কেউবা অন্য কোনো কাজে। কর্মব্যস্ততার মাঝেও আমাদের দিনগুলো সুন্দরভাবে কাটাতে দিনের শুরুতেই কিছু পরিকল্পনা করতে পারি। যা পুরো দিন ভালোভাবে কাটতে সাহায্য করবে এবং এর ফলে ব্যস্ততার মাঝেও ফরজ, নফল ও অন্যান্য ইবাদত পালন হয়ে যাবে।
- জামাতের সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়
যে ব্যক্তি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে তার সব আমল ঠিক হওয়ার সুসংবাদ শুনানো হয়েছে হাদিসে। রাসূল সা. বলেছেন, যার সালাত সুন্দর হবে তার অন্যান্য আমলগুলোও শুদ্ধ ও সঠিক হয়ে যাবে। বিপরীতে যার সালাত শুদ্ধ নয়, তার অন্য আমলও শুদ্ধ হবে না। (সহিহ তারগীব, হাদিস : ৩৬৯)।
এছাড়াও অন্য হাদিসে রাসূল সা. বলেছেন, প্রতিদিন পাঁচ বার গোসল করলে যেমন কোন ময়লা থাকে না, তেমনই দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করলে তার সমস্ত গুনাহ আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেন।(বুখারি, হাদিস : ৫২৮)
- সুন্নত ও নফল নামাজ আদায়
উম্মে হাবিবা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে ও দিনে ১২ রাকাত নামাজ আদায় করলো, জান্নাতে তার জন্য একটি ঘড় নির্মাণ করা হলো। সেগুলো হলো জোহরের (ফরজ নামাজের) পূর্বে চার রাকাত, পরে দুই রাকাত, মাগরিবের পর দুই রাকাত, ইশার পর দুই রাকাত, ফজর নামাজের পূর্বে দুই রাকাত। (তিরমিজি, কিতাবুস সালাত, ১/ ৪৪০,৪৪৫)
আরেক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় কেয়ামতের দিন বান্দার যে কাজের হিসাব সর্বপ্রথম নেওয়া হবে তা হচ্ছে নামাজ। সুতরাং যদি তা সঠিক হয়, তাহলে সে পরিত্রাণ পাবে। আর যদি (নামাজ) খারাপ হয়, তাহলে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
যদি তার ফরজের (ইবাদতের) মধ্যে কিছু কম পড়ে যায়, তাহলে আল্লাহ তায়ালা বলবেন, ‘দেখ তো! আমার বান্দার কিছু নফল (ইবাদত) আছে কি না, যা দিয়ে ফরজের ঘাটতি পূরণ করে দেওয়া হবে?’ অতঃপর তার অবশিষ্ট সমস্ত আমলের হিসাব ঐভাবে গৃহীত হবে। -(আবু দাউদ ৮৬৪, তিরমিজি ৪১৩, ইবনে মাজাহ ১৪২৫)
আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসঊদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি কোরআনের একটি হরফ পাঠ করবে সে একটি নেকি লাভ করবে। আর প্রতিটি নেকিকেই ১০ গুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম মিলে একটি হয়ফ; বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, এবং মীম আরেকটি হরফ। (তিরমিজি, হাদিস: ২৯১০)
হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, আবু মূসা আশআরি রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন কোরআন পাঠকারী মুমিনের দৃষ্টান্ত (মিষ্টি) কমলার ন্যায়, যার ঘ্রাণও উত্তম স্বাদও উত্তম। যে মুমিন কোরআন পাঠ করে না, তার দৃষ্টান্ত খেজুরের ন্যায়, যার কোন ঘ্রাণ নেই তবে এর স্বাদ আছে। আর যে মুনাফিক কোরআন পাঠ করে তার দৃটান্ত রায়হানা (ফুলের) ন্যায় যার ঘ্রাণ আছে তবে স্বাদ তিক্ত। আর যে মুনাফিক কোরআন পাঠ করে না তার দৃষ্টান্ত হানযালা (মাকাল) ফলের ন্যায়, যার সুঘ্রাণও নেই, স্বাদও তিক্ত। (বুখারি, হাদিস: ৫৪২৭)
- প্রত্যেক কাজের শুরুতে দোয়া
প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর কিছু মাসনুন দোয়া ও আমল রয়েছে। যেগুলো রাসুলুল্লাহ (স.) নিজে করতেন; সাহাবিদেরও আমল করার উপদেশ দিতেন। ওসব দোয়া ও আমল একদিকে অসীম সওয়াব লাভের কারণ, একইসঙ্গে এতে লাভ হয় বরকতময় জীবন। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘প্রত্যেক ফরজ নামাজের শেষে কিছু দোয়া আছে, যে ব্যক্তি ওইগুলো পড়ে বা কাজে লাগায়— সে কখনো ক্ষতিগ্রস্থ হয় না। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১২৩৭)
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-