স্টাফ রিপোর্টার, নাইক্ষ্যংছড়ি:
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে আওয়ামী সরকারের পতনের পর অনেকে রুপ পরিবর্তন করতে শুরু করেছে।
বিশেষ করে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনে শেখ হাসিনা’র দেশত্যাগের পর ঘুমধুম ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের শিক্ষা-মানব সম্পদ বিষয় সম্পাদক জাহেদ আলম এখন নিজেকে ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি জিসানুল হক, সাধারণ সম্পাদক কাঁকন বড়ুয়া স্বাক্ষরিত ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নুরুল আবছার (প্রকাশ ঢওয়া আবছার) নিজেকে যুবদল নেতা পরিচয় দিয়ে সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সৈরাচারের দোসর আবছার নিজেকে বৈষম্য বিরুধী ছাত্র আন্দোলন নেতা হিসেবেও পরিচয় দিয়ে থাকেন।
জাহেদ আলম ঘুমধুম ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের গুরামিয়া’র পুত্র ও পাহাড়তলী থানার ওসি বাবুল আজাদের ছোট ভাই। নুরুল আবছার ৪নং ওয়ার্ডের আব্দুল করিম (প্রকাশ কালা পুতুর) ছেলে।
৫ আগস্ট এর পর থেকে জাহেদ আলম ও নুরুল আবছার রাজনৈতিক কোলস পাল্টিয়ে বিএনপিতে পদ ধারণ করে ঘুমধুম ইউনিয়নের সর্বত্রই পরিবেশের ক্ষতিসাধন করে পাহাড় কাটা, বালি উত্তোলন, গাছ কাটা ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছে। জাহেদ আলম ওসি বাবুল আজাদের ছোট ভাই পরিচয়ে সর্বত্রই অপকর্ম করে বেড়ালেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছে।
সরকারি কোন ইজারাদার না হয়েও বছরের পর বছর নুরুল আবছার ঘুমধুমের তুমব্রু, কাস্টমস অফিস, টিভি টাওয়ার ও কচুবনিয়া পয়েন্ট থেকে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে। আবছারের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ গরু-মহিষ-ছাগল, বাশঁ,গাছ, ফুলের ঝাড়ু ও কৃষকের বাজারজাতকৃত শাক-সবজি থেকে চাঁদাবাজি করে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জাহেদ আলম এর নেতৃত্বে ঘুমধুম ইউনিয়নের সূর্যখালী, কচুবনিয়া, পাহাড় পাড়া ও চিকনছড়ি থেকে দিবারাত্রি পাহাড় কেটে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করলেও বরাবরই বনবিভাগ রয়েছে নিরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে। জাহেদ আলমের নেতৃত্বে ঘুমধুম খাল থেকে বালি উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে আওয়ামী সরকারের আমল থেকে। তাছাড়া আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে ঘুমধুমে আওয়ামীলীগের দখলকৃত কয়েকশ একর সরকারী বনভূমির জায়গায় প্রায় ডজনখানেক আকাশমণি বাগান সৃজন করছিল। উক্ত বাগান আওয়ামী নেতাদের কাছ থেকে ক্রয় করে গাছকাটা অব্যাহত রেখেছে জাহেদ আলম। এতে বন কর্মকর্তাদের মাথাব্যাথা নেই বললেই চলে। ৫ আগস্ট এর পর থেকে ঘুমধুমের অপরাধ সাম্রাজ্য জাহেদ আলম নিয়ন্ত্রণ করছে বলে জানিয়েছেন এলাকার সুশীল সমাজ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা।
অপরিকল্পিত পাহাড় কর্তন, সরকারি বনভূমি উজাড় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তর এর সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের বান্দরবানের সহকারী পরিচালক মো: রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন,আমি ওখানে (নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম) গিয়েছি। পাহাড় কাটার বিভিন্ন পয়েন্ট সরেজমিনে দেখেছি,কাটা চিহ্ন সংগ্রহ করেছি।পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সমন্ধয় সভায় পাহাড় কাটা, মাটি কাটা, বালু উত্তোলন বিষয়ে উত্থাপন করা হবে।পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি টীম ঘুমধুমে পাহাড় কাটার জায়গায় গেছে,এ সংক্রান্তে কাজ করছে।পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-