এলএসবিই গ্রাজুয়েশন মেলায়

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে করণীয় ও দক্ষতা উন্নয়নের গল্প শোনালো কিশোরীরা!

কক্সবাজার জার্নাল রিপোর্ট :

জীবন মানউন্নয়নে পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগলো উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখাঁ বড়বিল এলাকার কিশোরীর মাঝে। আত্মসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিজেদের জড়তা দূর করে দক্ষতা উন্নয়নসহ বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে লড়াই করার মনমানসিকতা তৈরি করেছে এসব কিশোরীরা। গ্র্যাজুয়েশন মেলায় তাদের বক্তব্যে উঠে আসে দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে নিজেদের সাহসী করার গল্পগুলো।

দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিতে এবং আত্মকর্ম নির্ভরশীল কিশোরীদের উৎসাহ ও প্রেরণা যোগাতে সেবামূলক সহায়তা প্রদানকারী এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারী এনজিও সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের উদ্যোগে গ্রাজুয়েশন মেলা গতকাল ১৯ জানুয়ারি (রোববার) বিকেলে রুমখাঁ বড়বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত গ্রাজুয়েশন মেলায় ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ-এর চাইল্ড সেইফটি নেট প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী ছোটন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হলদিয়াপালং ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শাহাজাহান।

এলএসবিই প্রকল্পের কমিউনিটি ফ্যাসিলিট্যাটর সাজিয়া ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রুমখাঁ বড়বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগম, প্রজেক্ট ম্যানেজার ফ্রান্সিস মন্ডল, মুবিলাইজেশন এবং সিস্টেম স্ট্রেংথেন অফিসার মিতু পাপিয়া সরকার ও অত্র এলাকার অভিভাবকগণ।

উক্ত গ্রাজুয়েশন মেলায় বক্তারা বলেন, বাল্যবিবাহ মানেই প্রতিভার পতন। বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক সমস্যা। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ একটি সামাজিক আন্দোলন। তাই বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে শক্তিশালী সামাজিক ব্রিগেড গড়ে তুলতে হবে। তাই ১৮ বছরের আগে কোনো মেয়েকে বিয়ে দিয়ে তার ভবিষ্যৎ বিপন্ন করবেন না। বিয়ের আগে মেয়েদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলুন।

বক্তারা আরও বলেন, মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক সচেতন কিন্তু মানসিকতার পরিবর্তন হয়নি। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে হলে পরিবারের সদস্যদের ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দারিদ্র্য কখনও বাল্যবিবাহের কারণ হতে পারে না। বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে পরিবার ঘুরে দাঁড়ালেই ঘুরে দাঁড়াবে সমাজ। তাই সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে ও বিষফোঁড়া বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে দায়িত্ব নিতে হবে এবং সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”

কমিউনিটি ফ্যাসিলিটেটর সাহেদ ইকবালের সার্বিক সহযোগিতায় আয়োজিত এই সভাটি বাল্যবিবাহ ও কিশোরীদের দক্ষতা উন্নয়নে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উক্ত গ্যাজুয়েশন মেলায় উপস্থিত কিশোরীদের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পাশ মার্ক দেওয়া হয় এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের পুরষ্কৃত করা হয়। এছাড়াও মেলায় চলা অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

উল্লেখ্য, গ্রাজুয়েশন মেলার আগে ওয়ার্ল্ড ভিশনের উদ্যোগে রুমখাঁ বড়বিল এলাকার কিশোরীদের ৩ মাস ব্যাপী ১২টি মডিউলের উপর জীবন দক্ষতা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

আরও খবর