এম ফেরদৌস :
- খাচ্ছে মানুষ,বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
- নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারি
উখিয়াতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আর রহমান বেকারিতে তৈরি হচ্ছে বিস্কুট, কেক, পাউরুটিসহ নানা ধরনের খাদ্যদ্রব্য। এসব খাদ্যদ্রব্যের প্যাকেটে নেই নির্দিষ্ট মেয়াদ ও প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতকরণ তথ্য। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে এ এলাকার সাধারণ মানুষের।
সরেজমিনে গিয়ে বেকারিতে দেখা গেছে, চারদিকে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, পাতিলে কালো পোড়া তেল। শ্রমিকরা অপরিচ্ছন্ন শরীরে খালি হাতে খাদ্যদ্রব্য তৈরি করছেন।
বেকারি ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় ময়লার স্তূপ। স্যাঁতসেঁতে মেঝে। টিনের একটি ঘরে বড় আকারের চুলা বসিয়ে বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তৈরি করা হচ্ছে। অপরিচ্ছন্ন শরীরে খালি হাতে এসব পণ্য তৈরি করছেন শ্রমিকরা। পাশেই রয়েছে কেমিক্যাল রং ও ফ্লেবার গুঁড়া।
মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর কেমিক্যালের রং ও কৃত্রিম ফ্লেবার ব্যবহার করে এই কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে তৈরি হচ্ছে এসব পণ্যগুলো। এই কারখানায় তৈরি খাদ্য বিক্রি হচ্ছে উখিয়া উপজেলার প্রত্যান্তঅঞ্চলে। সাধারণ মানুষ এসব ভিতরের কাহিনী না জেনে খেয়ে পেলছে খাবারগুলো পরে অসুস্থ হয়ে দৌঁড়ায় হাসপাতালে। তদারকি নেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়সারা ভাবে চলছে এসব।
স্থানীয়রা জানান, নানা কারণে বেকারিতে তৈরি খাদ্যসামগ্রীর চাহিদা মোটামুটি বেশ। বেশির ভাগ শিশুর পছন্দের খাবারের তালিকায় রয়েছে বিস্কুট, কেক, পাউরুটিসহ নানা বেকারি পণ্য। সাধারণ মানুষ এ জাতীয় খাবার বাজার থেকে কিনেও খায়। রিকশা-ভ্যানচালকসহ খেটে খাওয়া মানুষ এসব খাদ্য দিয়ে ক্ষুধা নিবারণ করে। ক্ষুধা নিবারণ করতে গিয়ে এসব খাবার দেহের বিভিন্ন রোগব্যাধি সৃষ্টি হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে,আর রহমান বেকারিতে রাত-দিন গরমে ঘামে ভেজা খালি গায়ে শ্রমিকরা আটা-ময়দা-দলিত মথিত করে। এর পর তৈরি হয় ব্রেড, বিস্কুট ও কেকসহ নানা লোভনীয় খাদ্য। উৎপাদন ব্যয় কমাতে এসব বেকারি পণ্যে ভেজাল আটা, ময়দা, ডালডা, তেল, নিম্নমানের বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন হাস-মুরগির খামারে বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ডিম ব্যবহার করা হয়। যেসব ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন হয় না, সেই পচা ডিম ব্যবহার করা হয় এসব কারখানায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাণিজ্যিকভাবে এসব পণ্য তৈরি ও বিপণন করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মনীতি রয়েছে। যা পালন করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু উখিয়ার আর রহমান বেকারিত তা পালন করা হয় না।
আর রহমান বেকারির মালিক ওবাইদুর রহমানের সাথে এসব বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বলে উঠে লাইসেন্স নিয়েই বেকারিতে পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। এরকম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কি পণ্য তৈরি করতে লাইসেন্স দিয়েছে কর্তৃপক্ষ..? এমন প্রশ্নের উত্তরে সন্তোষজনক উত্তর না দিয়ে বলে উঠে এই জবাব যাকে যখন দিতে হবে তাকে দিব আপনাদের দিব না।
বেকারির এসব ঘটনার বর্ণনা দিয়ে কক্সবাজার বিএসটিআই অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা শিমু বিশ্বাসের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করার জন্য কাউকে লাইসেন্স দেওয়া হয়না। পন্যেরগুনগত মান সঠিক রাখলেই বিএসটিইআইয়ের লাইসেন্স পাওয়া যায়। কেউ নিয়মনীতি ভংগ করলে অবশ্যয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অফিসে লোকবল কম থাকায় অভিযান কম হই। তবে এরকম স্পেসিফিক তথ্য পেলে ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হয়।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-