উখিয়ায় প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে সাবাড় করছে ইউপি সদস্য!

কক্সবাজার জার্নাল রিপোর্ট :


কক্সবাজারের উখিয়ায় প্রকাশ্যে দিনদুপুরে পাহাড় কেটে সাবাড় করছে ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা স্বপন শর্মা রনি। সোমবার(১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের ব্যস্ত থাকার সুযোগে দিনদুপুরে পাহাড় কেটে মাটি পাচারের দৃশ্য সরেজমিনে দেখা যায়।

উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে পাহাড় কাটার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, একটি ডাম ট্রাকে(ডাম্পার) পাহাড় কেটে মাটি ভর্তি করছে কয়েকজন শ্রমিক। পাহাড় কাটার ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা একজন জানায়,”ডাম্পারটি স্বপন মেম্বারের এবং মাটিও স্বপন মেম্বার কাটতে বলছে। রাস্তার কাজ চলতেছে সেখানে মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত স্বপন শর্মা রনি মাটি পাচারের বিষয়টি স্বীকার করেন।

মঙ্গলবার(১৭ ডিসেম্বর) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাহাড় কাটার স্পটে অভিযান পরিচালনা করে বনবিভাগ। ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগে মাটিভর্তি ডাম্পার পালিয়ে গেলে পাহাড় কাটার সময় একজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় বনবিভাগ। গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত সহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সহকারী বন সংরক্ষক মো. শাহিনুর ইসলাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,”গত মাস দেড়েক আগে থেকে দুই তিনটি স্পট থেকে স্বপন শর্মা রনির নিজস্ব মালিকানাধীন ডাম্পার দিয়ে পাহাড়ের মাটি পাচার করছে। প্রতি ডাম্পার মাটি দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি করছে বলে জানা যায়। তবে এভাবে পাহাড় কাটার বিষয়ে কারণ জিজ্ঞেস করলে বনবিভাগকে ম্যানেজের দায়িত্ব ইউপি সদস্য স্বপন শর্মা রনি নিজে নিয়েছে বলে জানান স্থানীয়দের।

এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন(বাপা) কক্সবাজার শহর শাখার সভাপতি ইরফান উল হাসান জানায়,” যেখানে জনপ্রতিনিধিরা পরিবেশ প্রকৃতি রক্ষা করে মানুষকে সচেতন করার কথা সেখানে উল্টো তারা নিজেরাই পাহাড় কাটার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি খুবই দু:খজনক। রক্ষক যখন ভক্ষকের ভূমিকায় রয়েছে অনতিবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।”

পাহাড় কেটে সাবাড় করার পরেও এ বিষয়ে অবগত নয় বলে জানিয়েছেন নিরব ভূমিকায় থাকা হলদিয়া পালং বিট কর্মকর্তা। সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকার পরেও দিনদুপুরে পাহাড় কেটে সাবাড় করে পরিবেশের ক্ষতির বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা সে প্রশ্নের জবাবে সহকারী বন সংরক্ষক(এসিএফ) শাহিনুর ইসলাম শাহিন জানায়,”আমি ইতিমধ্যে খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করে পাহাড় কাটার সময় একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। তার জবানবন্দি অনুযায়ী জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।”

আরও খবর