- শিক্ষার্থীর হারানো ফোন উদ্ধার হওয়ার পর নিজের পকেটে রাখতে ওসি তদন্তের যত কৌশল!
তোমারে সেন্টমার্টিন পোস্টিং করায় দিমু- এএসআইকে ওসি তদন্ত
ইমরান আল মাহমুদ, কক্সবাজার জার্নাল :
উখিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে নানা আলোচনা সমালোচনার জন্ম দেওয়া ওসি তদন্ত শফিকুল ইসলাম এবার ঘটিয়েছেন নতুন লঙ্কাকাণ্ড। এক স্কুল শিক্ষার্থীর হারিয়ে যাওয়া ফোন উদ্ধার করে এবার রেখে দিলেন নিজের পকেটে। জিডির তদন্ত কর্মকর্তা ওসি তদন্তের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ফোন চাইতে গিয়ে উল্টো হুমকির স্বীকার হয়েছেন। ফোন উদ্ধারকারী ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে “বেশি বাড়াবাড়ি করলে সেন্টমার্টিন পোস্টিং করায় দিমু” বলে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে ওসি তদন্তের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, উখিয়ার এক স্কুল শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন(ট্যাব) হারিয়ে গেলে সেটি উদ্ধারের জন্য উখিয়া থানায় জিডি করেন তার মা আছিয়া খাতুন। থানায় দায়ের করা জিডিমূলে হারানো ফোন উদ্ধার করেন এএসআই ইবাদুল হক। যার জিডি নং-৩৭৪। উদ্ধারকৃত ফোন প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়ার জন্য থানায় নিয়ে আসা হয় ফোনটি। প্রকৃত মালিক থানায় হাজির হলেও উখিয়া থানার ওসি তদন্ত শফিকুল ইসলামের হুমকি ধমকির কারণে ফেরত দিতে পারেননি এএসআই ইবাদুল। ঘটনাটি ঘটে গত ২৮ নভেম্বর বিকেলে।
সূত্রে জানা যায়, যার কাছ থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে তার সাথে ওসি তদন্ত শফিকুল ইসলামের সুসম্পর্ক থাকায় উদ্ধারকারী এএসআই ইবাদুলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন শফিকুল।
এএসআই ইবাদুল হক মুঠোফোনে বলেন, যার কাছে মোবাইল ছিলো কামাল সিকদার বিলের সে আবার দেখি তদন্ত স্যারের সাথে কথা বলছে। তদন্ত স্যারকে বললাম, স্যার যে লোকে আপনার সাথে কথা বলতেছে এর কাছ থেকে দুইটা মোবাইল উদ্ধার করছি। তখন তদন্ত স্যার কয়, আমারে জিজ্ঞায়া উদ্ধার করবানা? তখন আমি বলছি মোবাইলের তো হাজার হাজার জিডি হয়। আমরা এটি কললিস্ট দিয়ে উদ্ধার করি। তখন আমারে জানায়ছোনি বলে তদন্ত স্যার ধমক তমক দিলো। পরে ওসি স্যারের রুমে যায়। তদন্ত স্যারও গেলো, আমারে কয় কোনমূলে উদ্ধার করছো? তখন আমি বললাম জিডিমূলে উদ্ধার করছি।
তখন উদ্ধার করা মোবাইল দুটি তদন্ত স্যারকে দিলাম। দেওয়ার পরে তদন্ত স্যার আমার উপর গরম হইলো। তখন স্যার বলছে,”আপনারে কে বলছে এটা উদ্ধার করতে?”
ফোন উদ্ধারকারী পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানায়, যার থেকে মোবাইল উদ্ধার করছি তার সাথে কথা বলে তদন্ত স্যার। তখন আমারে তদন্ত স্যার ধমক দেয়। পরে আমি বলছি জিডির বাদী আসছে মোবাইল টা দিয়ে দেন না স্যার। তখন আমারে ধমক দিয়ে বলে, কিসের মোবাইল বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোমারে সেন্টমার্টিন পোস্টিং করায় দিমু। এটা বলার পর আরও বকাবকি করলো। পরে বাদী যখন কান্নাকাটি করতেছে স্যারের কাছে আবার গেলাম। আবারও যখন বকাবকি করলো তখন চলে আসছি।
জিডির বাদী আছিয়া খাতুন বলেন, আমার মেয়ে ১৪ মাস আগে পুরষ্কার হিসেবে মোবাইল ট্যাবটি পায়। পরে হারিয়ে গেলে মেয়ের কান্নাকাটি সহ্য করতে না পেরে থানায় জিডি করি। উদ্ধার করছে বলে থানা থেকে খবর দিলে সেখানে গিয়ে শুনি তদন্ত ওসি মোবাইল নিয়ে আর দিচ্ছে না। মোবাইল উদ্ধার হয়ছে বলে ফোন দিছিলো ইবাদুল হক স্যার। আমি আমার হারানো ট্যাব ফিরে পেতে চাই।
উদ্ধারকৃত মোবাইল(ট্যাব) নিয়ে এএসআই কে সেন্টমার্টিন পোস্টিং করার বিষয়ে জানতে চাইলে উখিয়া থানার ওসি(তদন্ত) শফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে এ বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, আমি কেনো পোস্টিং করাবো, পোস্টিং করাবে আমার কর্তৃপক্ষ।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আরিফ হোছাইন বলেন, ভূক্তভোগী তো আমার কাছে আসে নাই। ওসি তদন্ত সমাধান করতে না পারলে আমার কাছে এসে প্রতিকার চাইতে আসতে পারত। তা না করে ভূক্তভোগী সাংবাদিকদের কাছে গেছে। এখন যদি উদ্ধারকৃত ফোন বা ট্যাব আমিও না দিই সে কোথায় যাবে?
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-