কক্সবাজারে ছাত্রী অপহরণের দায়ে ২ আসামীর ১৪ বছর কারাদন্ড!

নিজস্ব প্রতিবেদক :

৬ষ্ঠ শ্রেণির স্কুল ছাত্রী অপহরণ করার মামলায় ২ পাচারকারীর ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড, ৩০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ (জেলা ও দায়রা জজ) এর বিচারক এস.এম জিললুর রহমান মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) এ রায় প্রদান করেন।

একই আদালতের স্টেনোগ্রাফার উত্তম কুমার দে এ তথ্য জানিয়েছেন।

দন্ডিত আসামীরা হলেন-কক্সবাজার পৌরসভার দক্ষিণ বাহারছরার কবরস্থান পাড়ার নুর হোসেনের পুত্র সোনা মিয়া এবং একই এলাকার মৃত হাকিম আলীর পুত্র হাফেজ আহমদ। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

বাদী পক্ষে অ্যাডভোকেট সাইদুল ইসলাম এবং আসামীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবদুর রশিদ মামলাটি পরিচালনা করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
২০০৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারী সকাল ৯ টা ১৫ মিনিটের দিকে কক্সবাজার পৌরসভার দক্ষিণ বাহারছরার কবরস্থান পাড়ার আবদুল হাকিমের শিশু কন্যা ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী বাড়ি থেকে বের হয়ে কক্সবাজার শহরের সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় অপহরণকারীরা অপহরণ করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় অপহৃত শিশুর পিতা আবদুল হাকিম বাদী হয়ে বাদী হয়ে অপহরণকারী সোনা মিয়া, হাফেজ আহমদ সহ ৪ জনকে আসামী করে কক্সবাজার থানায় একটি শিশু অপহরণ মামলা দায়ের করেন। যার কক্সবাজার থানা মামলা নম্বর : ২৬, তারিখ : ০৮/১১/২০০৯ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৬৮৬/২০০৯ ইংরেজি (কক্সবাজার সদর) এবং নারী নির্যাতন দমন মামলা নম্বর : ১৬/২০২১ ইংরেজি।

বিচার ও রায়:
২০১১ সালের ৫ জানুয়ারী কক্সজবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলাটির চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে বিচার কাজ শুরু করা হয়।

মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে ৮জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীদের পক্ষে তাদের জেরা, আসামীদের পক্ষে একজন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আলামত প্রদর্শন, আসামীদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ মামলার সকল বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে মামলাটি বিচারের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য্য করা হয়।

ধার্য্য দিনে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ (জেলা ও দায়রা জজ) এর বিজ্ঞ বিচারক এস.এম জিললুর রহমান আসামী সোনা মিয়া ও হাফেজ আহমদকে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৩০ ধারায় দোষী সাব্যস্থ প্রত্যেককে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড, একইসাথে ৩০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।

একই আদালতের স্টেনোগ্রাফার উত্তম কুমার দে আরো জানান, মামলাটির অপর আসামী নুর হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত না হওয়ায় রায়ে তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

এ রায় সম্পর্কে বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অ্যাডভোকেট সাইদুল ইসলাম বলেন, আদালতে মামলাটির যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ উত্থাপন করে আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বাদী পক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ রায়ে, শিশু পাচারকারী ও অপরাধ কর্মে জড়িতদের কাছে একটা ম্যাসেজ যাবে।

আরও খবর