গুহার পাথর সরে যাওয়ার কাহিনি

ফেরদৌস ফয়সাল :


আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রা.) বরাতে একটি হাদিস আছে।

নবী (সা.) বলেছেন, একবার তিনজন লোক পথ দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে তারা একটি পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিল। হঠাৎ পাহাড় থেকে এক খণ্ড পাথর পড়ে তাদের গুহার মুখ বন্ধ হয়ে যায়। তারা একে অপরকে বলল, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা নিজেদের কিছু সৎকাজের কথা চিন্তা করে বের করো। তাঁর অছিলা করে আল্লাহর কাছে দোয়া করা হলে হয়তো আল্লাহ তোমাদের ওপর হতে পাথরটি সরিয়ে দেবেন।

তাদের একজন বলতে লাগল, হে আল্লাহ! আমার আব্বা-আম্মা খুব বৃদ্ধ ছিলেন। আর আমার ছোট ছোট সন্তানও ছিল। আমি তাদের ভরণ-পোষণের জন্য পশু পালন করতাম। সন্ধ্যায় যখন বাড়ি ফিরতাম তখন দুধ দোহন করে আমার সন্তানদের আগে আমার আব্বা-আম্মাকে পান করাতাম। একদিন আমার ফিরতে দেরি হয়ে গেল। সন্ধ্যা হওয়ার আগে আসতে পারলাম না। এসে দেখি তারা ঘুমিয়ে পড়েছেন। তখন আমি দুধ দোহন করলাম, প্রতিদিন যেমন করি। তারপর আমি তাঁদের শিয়রে (দুধ নিয়ে) দাঁড়িয়ে রইলাম। তাদের জাগাতে লাগল না।

আবার তাদের আগে আমার বাচ্চাদের দুধ খাওয়ানোও সংগত মনে হলো না। বাচ্চারা অবশ্য দুধের জন্য আমার পায়ের কাছে পড়ে কান্নাকাটি করছিল। এভাবে ভোর হয়ে গেল। হে আল্লাহ! আপনি জানেন, আমি যদি শুধু আপনার সন্তুষ্টির জন্যই এ কাজটি করে থাকি, তাহলে আপনি আমাদের সামনে থেকে পাথরটা খানিক সরিয়ে দিন, যাতে আমরা আসমানটা দেখতে পাই।

তখন আল্লাহ পাথরটাকে সামান্য সরিয়ে দিলেন। তাতে তারা আসমান দেখতে পেল।

দ্বিতীয় ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ! আমার এক চাচাতো বোন ছিল। পুরুষেরা যেভাবে নারীদের ভালোবাসে, আমি তাকে তার চেয়ে বেশি ভালোবাসতাম। একদিন আমি তার কাছে বাসনা প্রকাশ করলাম (অর্থাৎ, কুপ্রস্তাব দিলাম)। কিন্তু তার জন্য এক শ দিনার না নিয়ে আসা পর্যন্ত সে সম্মত হলো না। চেষ্টা করে আমি তা জোগাড় করলাম। যখন আমি তার পদযুগলের মাঝখানে বসলাম। তখন সে বলল, হে আল্লাহর বান্দা! আল্লাহকে ভয় কর। অন্যায়ভাবে আমার সতীত্ব হরণ করো না। তখন আমি দাঁড়িয়ে গেলাম। হে আল্লাহ! আপনি জানেন, আমি যদি শুধু আপনার সন্তুষ্টির জন্য এ কাজটি করে থাকি, তাহলে আপনি আমাদের জন্য পাথরটা সরিয়ে দিন।

তখন পাথরটা কিছুটা সরে গেল।