উখিয়ায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি কর্তৃক প্রবাসীর স্ত্রীকে প্রাণনাশের হুমকি!

বার্তা পরিবেশক :

উখিয়র হলদিয়া পালং ইউনিয়নের পশ্চিম বড়বিল গ্রামের এক প্রবাসীর পরিবারকে জানে মেরে লাশ গুম করা সহ নানাভাবে ভয়ভীতি হুমকি প্রদর্শন করে রাতে ঘুম হারাম করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে আদালত কর্তৃক গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করা আসামীদের বিরুদ্ধে।

আদালতে দায়ের করা অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, রেমিট্যান্স যোদ্ধা জসিম উদ্দিন প্রবাসে থাকা অবস্থায় এলাকার ফরিদ আহমদ তার ভোগদখলীয় উখিয়া উপজেলাধীন রুমখাপালং মৌজার বি,এস ২৬১নং খতিয়ান ও সৃজিত বি,এস ২৬৬২ নং খতিয়ানের জমিটি বিক্রি করতে চাইলে প্রবাসী জসিম উদ্দিন তা ক্রয় করার প্রস্তাব করে পাশাপাশি একই এলাকার মো. মুজিব ও জাহাঙ্গীর আলমও একইভাবে প্রস্তাব করে।

এমতাবস্তায় জমির মালিকের জমির দরদাম নিয়ে বনিবানা না হওয়ায় জমির মালিক তাহার ভোগদখলীয় জমিটি জসিম উদ্দিনকে ন্যায্য মূলে বিক্রয় করিতে রাজি হয়। তার নিকট হইতে প্রবাসী জসিম উদ্দিন বিগত ০৭/১২/২০২৩ইং তারিখ রেজিঃকৃত ২৫১২/২৩নং কবলা মূলে ০.০৮৫০ একর জমি ক্রয় করেন। জসিম উদ্দিনের নামে নামে রুমখাপালং মৌজার বি,এস ৩০৮৮ নং খতিয়ান সৃজন হয় এবং খাজনাদি আদায় করিয়া ডিসিআর ও দাখিলা প্রাপ্ত হন। তপশীলোক্ত জমি জসিম উদ্দিনের অবর্তমানে আবদুল মাজেদ নামক এক ব্যাক্তিকে ধান চাষসহ যাবতীয় সংরক্ষনে বর্গাচাষী নিয়োগ করেন।

জসিমের ক্রয়কৃত জমিতে মুজিব ও জাহাঙ্গীর আলমের কোন প্রকার স্বত্ব না থাকা সত্তেও দেশে বর্তমানে জায়গা জমির দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে লোভের বশিভূত হয়ে জবর দখল করে নিলে প্রবাসী জসিমের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কক্সবাজার একটি মামলা দায়ের করে।

আদালত বিষয়টি সরজমিনে তদন্ত পুর্বক প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ( পিবিআই) নির্দেশ প্রদান করেন।

এদিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন সুষ্ঠু তদন্ত পুর্বক পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) রাজীব কুমার দাশের স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে বাদীর পরিবারে কোন পুরুষ লোক না থাকার সুযোগে বাদীকে নিরহ ও একা পেয়ে এবং বাদীর স্বামীর ক্রয়কৃত জমিটি বিবাদীদের বাড়ির সাথে লাগোয়া হওয়ায় বিবাদী মোঃ মুজিব ও জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ২০/০৩/২০২৪ইং তারিখ সকাল অনুমান ১০টার সময় বাদীর স্বামীর স্বত্ব দখলীয় ০.০৮৫০ – একর জমির পরিমাপের অজুহাতে বাদীর বর্গাচাষা সাক্ষী আবদুল মাজেদের রোপিত ধান্য চাষে যেতে বাঁধা নিষেধ করে। বিবাদীগণ পরস্পর যোগসাজসক্রমে বাদীর স্বামীর মালিকানাধীন জমি তার মালিকানা প্রাপ্ত না হওয়ায় সত্ত্বেও স্বীয় মালিকানাধীন জমি হিসাবে এলাকায় প্রচার করতে থাকে। পরবর্তীতে বাদী ঘটনার খবর পাওয়ার পর নিম্ন তপশীলোক্ত জমিতে প্রবেশ করার চেষ্টা করিলে বিবাদীদ্বয় বাদীকে উক্ত জমিতে প্রবেশে বাঁধা প্রদান করে এবং জমিটি তাহাদের বলে দাবী করে। বাদী স্বামীর স্বত্ব দখলীয় ০.০৮৫০ একর জমির বৈধ রেজিঃ দলিল এবং সর্বশেষ খতিয়ান, সরকারী খাজনার দাখিলা, জমির মালিকানা থাকার পরও বিবাদী দ্বয় সম্পূর্ণরূপে অন্যায় লোভের বশবর্তী বাদীর স্বামীর ক্রয়কৃত ভোগ দখলীয় জমিটি জবর দখল করে রাখে। বিবাদীদেরকে জমির দখল ছাড়িয়া দেওয়ার জন্য বলিলেও বিবাদীগণ দূর্লোভের বশবর্তী হয়ে বাদীর স্বমীর স্বত্ব দখলীয় জমির দখল ছাড়বে না বলে জমিটি জবর দখল করে রাখে। বিবাদীদের নামে বৈধ কোন মালিকানা স্বত্বের দলিল বা খতিয়ান নেই। অন্যায়ভাবে জোর পূর্বক দখল করিয়া রেখেছে মর্মে স্থানীয় তদন্তে এবং সাক্ষীদের জবানবন্দিতে প্রকাশ পায়।

সার্বিক তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণে, বিভিন্ন দালিলিক সাক্ষী পর্যালোচনায় এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় ১। মোঃ মুজিব (৪৫), পিতা- মৃত জামাল উদ্দীন, ২। জাহাঙ্গীর আলম (৪৬), পিতা- ছলিম উদ্দিন, উভয় সাং- খোন্দকার পাড়া, ১নং ওয়ার্ড, রত্নাপালং ইউপি, থানা- উখিয়া, জেলা- কক্সবাজার দ্বয় বাদীর স্বামীর নামে ক্রয়কৃত ভোগ দখলীয় জমি নিজেদের বলিয়া প্রচার করতঃ বাদীর স্বামীর ভোগ দখলীয় জমি জোর পূর্বক জবর দখল করিয়া রাখায় বিবাদী দ্বয়ের বিরুদ্ধে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এর ৪(১) (ক)/৮(১)/১৬ ধারার অপরাধ প্রাথমিক ভাবে সত্য বলিয়া প্রতীয়মান হয়। ১৫। মতামতঃ বাদীর আনীত অভিযোগ পর্যালোচনা করা হইয়াছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র ও সূচীপত্র প্রস্তুত করা হইয়াছে। অত্র মামলা সংক্রান্তে আলামত জব্দের চেষ্টা করা হইয়াছে। সিআর মামলার ঘটনা সংক্রান্তে বাদীর মানীত ০৪ জন এবং নিরপেক্ষ ০২ জন সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করা হইয়াছে। মামলাটি সার্বিক তদন্তে, প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণে ও ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় নথিতে যুক্ত কাগজপত্র পর্যালোচনায় নিম্নোক্ত মতামত প্রদান করা হইল। ক। সার্বিক তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণে, বিভিন্ন দালিলিক সাক্ষী পর্যালোচনায় এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় ১। মোঃ মুজিব (৪৫), পিতা- মৃত জামাল উদ্দীন, ২। জাহাঙ্গীর আলম (৪৬), পিতা- ছলিম উদ্দিন, উভয় সাং- খোন্দকার পাড়া, ১নং ওয়ার্ড, রত্নাপালং ইউপি, থানা- উখিয়া, জেলা- কক্সবাজার দ্বয় বাদীর স্বামীর নামে ক্রয়কৃত ভোগ দখলীয় জমি নিজেদের বলিয়া প্রচার করতঃ বাদীর স্বামীর ভোগ দখলীয় জমি জবর দখল করায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এর ৪(১) (ক)/৮(১)/১৬ ধারার অপরাধ প্রাথমিক ভাবে সত্য বলিয়া প্রতীয়মান হয়।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ( পিবিআই) এই প্রতিবেদনের পর আদালত মোঃ মুজিব ও জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করে।

এদিকে আদালতের ঐ গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারির পর প্রবাসী জসিম উদ্দিনের পরিবারকে প্রতিনিয়ত নানান ভাবে ভয়ভীতি হুমকি ধমকি প্রদর্শন করে আসছে, যার ফলে রেমিট্যান্স যোদ্ধা জসিম উদ্দিনের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে বলে স্ত্রী মাহমুদা বেগম জানান।

এ ব্যাপারে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এই অসহায় পরিবারটি।