উখিয়ায় পাহাড় ধ্বংসের অন্যতম কারিগর মনচানু: মাটি বিক্রি করে বনে যান কোটিপতি

 

  • ধ্বংস করেছে প্রাকৃতিক পরিবেশ
  • রয়েছে বন ও পরিবেশ মামলা
  • সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরদারি জরুরী

এম ফেরদৌস, উখিয়া :


যার নুন আনতে পান্তা ফুরাই এমন ব্যাক্তিও স্বৈরাচার সরকারের আমলে বিভিন্ন অবৈধ সুযোগ সুবিধা নিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন উখিয়ায়।

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ার কুতুপালংয়ে এমন দৃশ্য অহরহ রয়েছে।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, কুতুপালংয়ের মনছানু বড়ুয়া ক্ষমতার অপ-ব্যবহারের মাধ্যমে পশ্চিম পাড়ার বিশাল পাহাড়ী বনাঞ্চল ধ্বংস করে সমতল ভুমিতে পরিনত করেছেন।

তিনি অবৈধ ড্রাম্প ট্রাক যোগে পাহাড়ী বনাঞ্চলের মাটি বিভিন্ন দোকান ভরাট, ঘর বানাতে জমি ভরাটসহ বিভিন্ন ভরাট কাজে এই পাহাড়ি মাটি বেচা-বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন।

তার নিজস্ব মালিকানা ৪/৫ টিরও বেশি অবৈধ ডাম্পার দিয়ে বিভিন্ন পাহাড় কর্তনের কন্ট্রাক্ট নিয়ে কুতুপালং এলাকায় রীতিমতো পাহাড় খেকো’র উপাধি পেয়েছেন।

এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, বনবিভাগ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর ম্যানেজ করে তিনি তার এসব অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়েছেন। তৎসময়ে কোন নেতা বা কোন প্রশাসন বাধা দিতো না। সবাই তার মাটি বিক্রির টাকায় ভাগ বসিয়ে পকেট ভারী করে চুপ থাকতেন।

দক্ষিণ বনবিভাগ উখিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার গাজী শফিউল ইসলাম বলেন, পাহাড়া কাটা ও বনাঞ্চলের ক্ষতি করায় মনছানু বড়ুয়ার বিরুদ্ধে উখিয়া সদর বিটে ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলা গুলো চলমান রয়েছে। পাহাড় কাটা ও বনাঞ্চল রক্ষার্থে উখিয়া রেঞ্জ কঠোর অবস্থানে আছে। সরকারি সম্পদ রাক্ষার্থে যতই প্রভাবশালী হউক না কেন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয়রা বলছেন, মনছানু বড়ুয়া পাহাড়ী মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ডুপ্লেক্স বাড়ি করেছেন প্রায় ২ কোটি টাকারও বেশি খরচ করে। ছেলেদের বাহিরে লেখাপড়া করাচ্ছেন এবং আরেকজনকে ইউরোপ দেশে পাঠিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে। তার এত টাকার উৎস একমাত্র পাহাড়ী মাটি পাচার ও মাটি বিক্রি।

এ বিষয়ে মনছানু বড়ুয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে বন ও পরিবেশের মামলা রয়েছে সত্য। আমি পাহাড় কেটেছি তাও সত্য। তবে যে পাহাড়গুলো কেটেছি এগুলা বন-বিভাগ পুনরায় গাছ রোপন করে দিয়েছেন।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, মনছানু বড়ুয়া পাহাড়ি মাটি বিক্রি করে যে সম্পদ আয় করেছেন সেই সম্পদ ক্রোক করে পরিবেশ উন্নয়ন ও পরিবেশ বান্ধব কাজে ব্যবহার করা হউক। তার বিরুদ্ধে যে মামলা গুলো হয়েছে সেগুলো কচ্ছপের গতিতেই চলছে। দৃশ্যমান কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। সে যে এত বড় অপরাধ করল সেটি দৃশ্যমান। অথচ তার বিচারিক কাজে এত কচ্ছপ গতি কেন প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।