কক্সবাজারে ২৯ বছর আগের দুই হত্যা মামলার রায়, চারজনের মৃত্যুদণ্ড

বিশেষ প্রতিবেদক :

প্রায় ২৯ বছর আগে কক্সবাজারের মহেশখালী ও রামুতে সংঘটিত ২টি হত্যা মামলার রায় গতকাল মঙ্গলবার কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতে ঘোষিত হয়েছে।

মামলার রায়ে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ির রব্বত আলী হত্যা মামলায় তিনজন এবং রামু উপজেলার পানিরছড়ার খোরশেদ আলম বাবুল হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে তিন আসামিকে দুই লাখ ও অপরজনকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক মোশারফ হোসাইন পৃথকভাবে এ রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডিত আসামিরা হলেন– শামসুল আলম, করিম দাদ, আব্দুল মুনাফ ও শেরে ফরহাদ।

আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি এডভোকেট মোজাফফর আহমেদ হেলালী জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ১৯৯৫ সালের ৪ মার্চ কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে ছোট ভাইয়ের ষড়যন্ত্রে খুন হন রব্বত আলী নামের এক দিনমজুর। নিহতের ছোট ভাই জালাল আহমেদ এ ঘটনায় নিজেকে আড়াল করতে পরদিন (৫ মার্চ) বাদী হয়ে ৪১ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ২০ মার্চ এ মামলার বাদী জালাল আহমদকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি ফৌজদারি দরখাস্ত করেন নিহতের স্ত্রী জুবাইরা বেগম।

আদালত মামলা দুটির তদন্ত সিআইডির সিনিয়র অফিসার দিয়ে সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। এরপর সিআইডির পরিদর্শক করিম গণি দীর্ঘ তদন্ত শেষে জালাল আহমেদকে প্রধান করে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। পরে আদালতে দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে গতকাল মঙ্গলবার তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

অপর দিকে আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি শওকত বেলাল জানান, ১৯৯৫ সালের ২০ ডিসেম্বর রামু উপজেলার পানিরছড়া মামুন বাজার এলাকায় একটি যাত্রীবাহী ট্যাক্সির ভাড়াকে কেন্দ্র করে চাচাতো ভাই শেরে ফরহাদের হাতে খুন হন খোরশেদ আলম বাবুল।

নিহত বাবুল ভারুয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভূঁইয়ার ছেলে। একইদিন আবুল কাশেম বাদী হয়ে শেরে ফরহাদ ও তার বাবা সিরাজুল ইসলামকে আসামি করে রামু থানায় মামলা করেন। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রামু থানার তৎকালীন এসআই মোহাম্মদ মোস্তফা দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দেন।

পরে আদালতে দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে মঙ্গলবার ঘোষিত রায়ে শেরে ফরহাদকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আসামি সিরাজুল ইসলাম ইতিপূর্বে মৃত্যুবরণ করায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত।