রোহিঙ্গা শিবিরে এক সপ্তাহ পর একই ক্যাম্পে আবারো আগুন!

আবদুল্লাহ আল আজিজ,  কক্সবাজার জার্নাল :

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দুই শতাধিক ঝুপড়ি ঘর, দোকান, লার্নিং সেন্টার পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। তাৎক্ষণিক তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

শনিবার (১ জুন) দুপুর একটার দিকে তাজনিমারখোলা ১৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-১, ডি-২ ও ডি-৩ ব্লকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে এবং বেলা আড়াইটা পর্যন্ত দেড় শতাধিক রোহিঙ্গার ঘর ও স্থানীয় চারজনের পুড়ে গেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের দোকান, মসজিদ ও হেফজখানা,গোসলখানা এবং টয়লেট পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করেছেন। বর্তমানে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক ও পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আমির জাফর বলেন, বেলা একটার দিকে আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১৩) কাঁঠালতলী বাজারে আকস্মিক আগুন জ্বলে ওঠে। এ সময় সাধারণ রোহিঙ্গারা হইচই ও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। মুহূর্তেই আগুন কাঁঠালতলী বাজারসহ আশপাশের রোহিঙ্গা বসতিতে ছড়িয়ে পড়ে। এপিবিএন পুলিশ তাৎক্ষণিক উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি জানায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। বেলা পৌনে তিনটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন এপিবিএন কর্মকর্তা।

ডি-১ ব্লকের মাঝি বশির বলেন, অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত আমাদের জানা নেই। আমার ব্লকের সব ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আহতের তথ্য জানা নেই।

ডি-২ ব্লকের মাঝি জাহিদ হোসেন বলেন, হঠাৎ কীভাবে আগুন ধরেছে আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। ঘর থেকে কিছু কিছু জিনিস আমরা বের করতে পেরেছি।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন অগ্নিকাণ্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করেছে।

কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক অতীষ চাকমা জানান, ঘণ্টাদেড়েকের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রামু ও উখিয়ার ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, স্থানীয়দের ঘরবাড়ি পুড়ে যাওয়ার খোঁজ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২৪ মে একই ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ভস্মিভূত হয় ৩ শতাধিক বসত ঘরসহ নানা স্থাপনা। অনেক রোহিঙ্গা পরিবার এখনো দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

 

আরও খবর