৩ শতাধিক স্থাপনা পুড়ে ছাই

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও কারিতাসের বিরুদ্ধে অগ্নিকাণ্ড পূর্বক নাশকতার অভিযোগ!

রতন কান্তি দে :

কক্সবাজারের উখিয়ার থাইংখালী ১৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে ক্যাম্পের ভেতরে একটি বাজারের বেশ কিছু দোকান এবং ২৯০টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়েছে। আগুন নিভাতে গিয়ে আরো প্রায় ২৫টি মত শেড তাৎক্ষনিক ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এতে আনুমানিক প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

শুক্রবার (২৪ মে) বেলা ১২ টার দিকে ওই এলাকার তাজনিমার খোলা ক্যাম্পের ডি-ব্লকে কাঁঠাল গাছতলায় একটি বাজারে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে আগুন পাশের ক্যাম্পের বসতঘরে ছড়িয়ে পড়ে।

কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক অতীষ চাকমা জানান, উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট, টেকনাফ, কক্সবাজার, রামু ও ক্যাম্প এর ছোট ৪টি ইউনিটসহ মোট ১০টি ইউনিট এসে দুপুর পৌনে ২টার দিকে টানা দুই-ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, আগুন লাগার ফলে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে বসবাসরত ২টি স্থানীয় বাসিন্দার ঘর, মসজিদ, লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গা শরণার্থীর শেডসহ মোট ২৮০টি দোকান, আসবাবপত্রসহ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদৌজ্জা নয়ন জানিয়েছেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে উখিয়া, টেকনাফ এবং কক্সবাজার জেলা সদর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় দুপুর ১ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ঘটনাস্থলে এপিবিএন, উখিয়া থানা পুলিশ, সেনাবাহিনী, রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে। তারা অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করার কাজ করছে বলে জানান তিনি। তবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনও কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

উখিয়ার ক্যাম্পে দায়িত্বে নিয়োজিত ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ আমির জাফর বলেন, ‘ক্যাম্পে কারিতাস নামক একটি এনজিও কার্যালয় থেকে ক্যাম্পে আগুন ধরে। কিন্তু বাতাসের কারণে চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।’

তানজিমার খোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মৌলভী হাসান বলেন, ‘হঠাৎ করে ঘরের ছাউনিতে আগুন দেখে দিশাহারা হয়ে পড়ি। প্রথমে ঘরের লোকজনকে সরিয়ে নিই। এরপর আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। যখন আগুন আরও চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন ঘরের জিনিসপত্র বের করে ফেলি। তবে আগুনে পুড়ে গেছে অনেকের ঘরবাড়ি। আগুন লাগার ঘটনাটি দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত সেটি খতিয়ে দেখা দরকার।’ তবে স্থানীয় দায়িত্বশীল সুত্রে জানা গেছে, ক্যাম্পকে অস্থির করে তুলতে কারিতাস এনজিও’র লোকজন পরিকল্পিত এই আগুনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

আরও খবর