কক্সবাজারে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত হচ্ছে আধুনিক বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’

  • ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান

এম.এ আজিজ রাসেল, কক্সবাজার :


কক্সবাজারে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত হচ্ছে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’। আইন ও বিচার বিভাগের তত্বাবধানে ৫২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার আদালত পাড়ায় গণপূর্ত বিভাগ কাজটি বাস্তবায়ন করছে। শনিবার (১৮ মে) সকালে ‘ন্যায়কুঞ্জের’ ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন দেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

এসময় তিনি বলেন, ‘আদালতে আসা মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন। ন্যায়কুঞ্জ বিচারপ্রার্থীদের স্বস্তি ও নিরাপত্তা বাড়াবে। পাশাপাশি অযথা বিড়ম্বনা ও হয়রানি কমাবে।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আপীল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, আপীল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, আপীল বিভাগের সদ্য সাবেক বিচারপতি বোরহানউদ্দিন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাঈমা হায়দার, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জে.বি.এম হাসান, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদ, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. ইকবাল কবির, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস.এম কুদ্দুস জামান, কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন, জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট আবুল কালাম ছিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো. রেজাউর রহমান।

জানা যায়, নির্মাণাধীন ন্যায়কুঞ্জের আয়তন এক হাজার বর্গফুট। অত্যাধুনিক নান্দনিক স্থাপত্য শৈলীতে ডিজাইন করা সুপরিসর আধুনিক বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জে একত্রে ৬০/৭০ জন বিচার প্রার্থীদের বসার জায়গা, ওয়াশরুম, ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার, ফাস্টফুডের দোকান, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, নারী ও শিশুদের জন্য আলাদা কক্ষে বসার ব্যবস্থা সহ বহুমুখী সুবিধা থাকবে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো. রেজাউর রহমান নির্মাণাধীন বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জ সম্পর্কে বলেন, ‘মানুষ দূর-দূরাস্ত থেকে আদালতে আসেন, কেউ আসেন বিপদে পড়ে, আবার কেউ বিপদ থেকে উদ্ধার হতে এখানে আসেন। এসব বিচারপ্রার্থীরা আইনজীবীর চেম্বারে গিয়ে সাক্ষাতের পর এবং আদালতে যাওয়ার আগে-পরে আর বিশ্রামের জন্য কমন কোন জায়গা পাননা। বিশেষ করে নারী ও বয়স্ক বিচারপ্রার্থীদের আদালত পাড়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নির্মাণাধীন বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জ বিচারপ্রার্থীদের সেই দুর্ভোগ লাগবে সহায়ক হবে।’

কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম বলেন, ‘বিচারপ্রার্থীদের বসার জন্য একটি স্থান খুবই প্রয়োজন ছিলো। কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের বসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে, বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মাণাধীন বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জ স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট বিচারব্যবস্থার অংশ বলে তিনি মন্তব্য করেন।’

কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার বলেন, ‘বিচারপ্রার্থীরা অনেক দূর-দূরান্ত থেকে আমাদের কাছে আসেন। জুডিসিয়ারির স্টেকহোল্ডার হচ্ছেন তারা। তাদের জন্য বিচার। কিন্তু তাদের বসার জন্য, ওয়াশরুম সারার জন্য কোন ব্যবস্থা আদালত প্রাঙ্গণে নেই। আবার বিচারপ্রার্থীরা আদালত এলাকায় বিভিন্ন সময় টাউট বাটপারের খপ্পরে পড়ে অযথা হয়রানির শিকার হন। নির্মাণাধীন বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জ বিচারপ্রার্থীদের একদিকে, হয়রানি থেকে মুক্ত করবে, অন্যদিকে নিরাপদে বসার জায়গা হবে। তবে ন্যায়কুঞ্জ যেন দালাল, টাউট, বাটপারের দখলে চলে না যায়, তাদের ব্যবসার ক্ষেত্র বানিয়ে না ফেলে। সেদিকেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুনজর রাখতে হবে।’

আরও খবর