উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত সড়ক নির্মাণে ধীরগতি, জনদুর্ভোগ চরমে

  • দুই ঠিকাদারের দ্বন্দ্বে সংস্কার কাজ বন্ধ
  • দুর্ভোগে পড়েছেন দুই উপজেলার মানুষ
  • সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরদারি জরুরী

এম ফেরদৌস ( উখিয়া, কক্সবাজার) :
দুই ঠিকাদারের দ্বন্দ্বে ভালুকিয়া তুলাতুলী হয়ে রেজু বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত সড়কের কার্পেটিং উন্নয়নকাজ ধীরগতি হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পূর্বাঞ্চলের সাধারণ মানুষ। পাহাড়ীজনপদ এলাকার সড়কটিতে উচু-নিচু ঢালু থাকায় চলাচলের জন্য এমনিতেই সাধারণ মানুষ নানান ভোগান্তিতে শিকার হয়। তার উপরে রয়েছে একই সড়কে দুই ঠিকাদারের দ্বন্দ্ব।

জানা যায়, সড়কটি উখিয়া এবং নাইক্ষ্যংছড়ি দুই উপজেলার সীমান্তের সংযোগ সড়ক হওয়ায় প্রতিবারই সড়কটি নাইক্ষ্যংছড়ি এলজিইডি অফিস থেকে টেন্ডার করে সেখানকার ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ করা হতো। যদিও সড়কটি উখিয়া উপজেলার আওয়াতাধীন রয়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে সেই সড়কটি উখিয়া এবং নাইক্ষ্যংছড়ি দুই উপজেলা থেকে এক সাথে টেন্ডার হয়ে যায়। সেই টেন্ডারকৃত সড়কটি দুইজন ঠিকাদার নিয়োগ পেলে কে কাজ করবে তা নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিবাদ শুরু হয়। পরে অফিসিয়াল সমঝোতায় দুই ঠিকাদারের এসব জট-ঝামেলা অনেকটা সামাধানের পথে চলে আসে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে উখিয়া থেকে টেন্ডারে পাওয়া ঠিকাদার সেলিম রেজা সড়কটিতে কার্পেটিং কাজ করছে অন্যদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে টেন্ডারে পাওয়া ঠিকাদার মহিউদ্দিন গাইডওয়ালের কাজ করছেন।

কার্পেটিং কাজ সুন্দরভাবে চললেও গাইডওয়ালের কাজে বড় বড় গর্ত করে মাটি ভরাট না করাই কার্পেটিং কাজে বাধা পড়ে। ফলে সড়কে যাতায়াত পথ বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন দুই উপজেলার মানুষ।

দুই ঠিকাদারের মধ্যে এসব খুটিনাটি বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়ে এপার-ওপার দুই পারের মানুষ যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হওয়া মোটেও কাম্য নই বলে মন্তব্য করছেন সুশীলরা। উভয়ের সমন্বয়ে সড়কটি দ্রুত সংস্কারকাজ সম্পুর্ন করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। উখিয়া এবং নাইক্ষ্যংছড়ি দুই উপজেলার নির্বাহী অফিসার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন তারা।

উখিয়া এলজিইডি অফিস সুত্রে জানা যায়, উখিয়া থেকে টেন্ডার হওয়া অই সড়কটি ঠিকাদার কাজ শুরু করার আগেই নাইক্ষ্যংছড়ির ঠিকাদার মহিউদ্দিন গাইডওয়াল করতে রাস্তার চারপাশে বিশাল গর্ত করে পেলছিল। যার কারণে তাদের প্রতি সম্মান রেখে গাইডওয়ালের কাজগুলো তাদের মাধ্যমে করতে দেওয়া হয়ছিল। কিন্তু তারা গাইডওয়ালের কাজগুলো অসম্পূর্ণ রেখে চলে যায়। ফলে সড়কে কার্পেটিং করা অসাধ্যকর হয়ে পড়েছে। বিষয়টি তাদের বার বার অবগত করেও আমলে নেয়নি। এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন তারা।

নাইক্ষ্যংছড়ির ঠিকাদার মহিউদ্দিন জানান, অই সড়কে আমাদের কাজ করতে দেয়নি কক্সবাজারের ঠিকাদার সেলিম। আমরা শুধু গাইডওয়ালের কাজ করছি। সেখানে সড়কের কাজ করবে কক্সবাজারের ঠিকাদার সেলিম। গাইডওয়ালের কাজে যা যা করা লাগে তা আমরা করেছি। তারপরও আপনারা যখন বলছেন আমরা গিয়ে সেটা দেখে আসব।

কক্সাবাজারের ঠিকাদার সেলিম রেজা বলছে, নাইক্ষ্যংছড়ির ঠিকাদার মহিউদ্দিন গাইডওয়াল করে সেখানে গর্তগুলো ভরাট না করে চলে গেছে। রাস্তার পাশে এত বড় গর্ত ভরাট না করলে আমি কার্পেটিং কাজ করলে এগুলা টেকসই হবে না। ফলে আমি কাজ বন্ধ রেখেছি। অই ঠিকাদার গাইডওয়ালের জন্য করা গর্তগুলো ভরাট করলেই আমি দ্রুত কার্পেটিং কাজ সম্পূর্ন করব।

স্থানীয়রা বলছে, দুই ঠিকাদারের গাফলতি ও দ্বন্দ্বের মাশুল দিচ্ছে উখিয়া এবং নাইক্ষ্যংছড়ি দুই উপজেলার সাধারণ মানুষ। ঈদের সময়েও মানুষ যাতায়াত ব্যবস্থায় খুবই কষ্টকর হয়েছে। এপারের মানুষ ওপারে যাইতে পারছেন না ওপারের মানুষ এপারে আসতে পারছে না। সড়কে খানাখন্দভরা।ধুলাবালিতে সড়কের পাশের এলাকাগুলো বিবর্ণ হয়ে গেছে। চারপাশে সবুজের সমাহার সাদা ধুলাবালির রুপ নিয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম’কে একাধিকবার কল দিয়েও রিসিভ না করায় তাঁর মন্তব্য জানা সম্ভব হলো না।

আরও খবর