ডেস্ক রিপোর্ট :
আনুমানিক ৪০ থেকে ৫০ ফুট উঁচু পাহাড়। চারদিকে কেটে তৈরি করা হয়েছে কূপ, যেন এটি একটি মৃত্যুকূপ। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে নিচের এবং পাহাড়ের উপরের বসতি। গত এক সপ্তাহ ধরে কক্সবাজার পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাদশাঘোনা এলাকায় সুফিয়া আকতার শেফালী নামের এক নারী ১০/১২ জন শ্রমিক দিয়ে পাহাড় কেটে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, শেফালী নামের ওই নারী এক জনপ্রতিনিধির আত্মীয় পরিচয়ে প্রভাব বিস্তার করে এলাকার সাধারণ মানুষকে হুমকির মুখে রেখেছেন। ২০২১ সালে সরকারি পাহাড় কেটে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তখনও পরিবেশ অধিদপ্তর সেখানে অভিযান পরিচালনা করেছিল। কিন্তু কিছুই তোয়াক্কা করেননা এই নারী। তাঁর এভাবে পাহাড় কাটার ফলে পাহাড়ের উপর ঝুঁকিতে রয়েছে মরিয়ম নামের একজনের বসতি।
মরিয়ম বলেন, ‘শেফালী বছরের পর বছর ধরে যেভাবে পাহাড় কেটে নিচ্ছে তাতে আমরা অসহায়। আমার জায়গা ও বাড়ি এখন ঝুঁকিতে রয়েছে, এটি যে কেউ এসে দেখতে পারবে। এছাড়া শেফালীর কাছে পরিবেশ অধিদপ্তর, প্রশাসন, সাংবাদিক কিছুই না। অপরাধ করলেও তাঁর কিছুই হয়না।’
এ ঘটনায় গত ১২ মার্চ পাহাড় কাটার স্থান সরেজমিন পরিদর্শন করেন পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সিনিয়র কেমিস্ট মোঃ আবদুস সালাম। তিনি বলেন, ‘উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমি পাহাড় কাটার সত্যতা পেয়েছি। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।’
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ নুরুল আমিন বলেন, ‘পাহাড় কাটার ঘটনায় আমলযোগ্য বিষয়টি অবশ্যই আমরা আমলে নিব। পাহাড় কর্তনকারী প্রভাবশালী হলেও ছাড় দেয়া হবে না।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সুফিয়া আকতার শেফালী বলেন, ‘আমি এখন পাহাড় কাটছিনা, পাহাড় কেটে আমি ঘর করে ফেলেছি। এখন পাহাড় কাটছেন সালমা।’
এদিকে পাহাড় কাটার দায় থেকে বাঁচতে সুফিয়া আকতার শেফালী নামের ওই নারী পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা অভিযোগ, অপপ্রচার ও চরম মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ১২ মার্চ পরিবেশ অধিদপ্তরের যে কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন তাঁর নামে ১৩ মার্চ হুমকি এবং সাংবাদিকদের নামে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ আনেন। অন্যদিকে ১৪ মার্চ মানববন্ধনের নামে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন ওই নারী।
জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সিনিয়র কেমিস্ট মোঃ আবদুস সালাম বলেন, ‘উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি পাহাড় কাটার স্থান পরিদর্শন করেছি। সেখানে সাংবাদিকের নামে টাকা চাওয়ার প্রশ্নই আসেনা। মূলত পাহাড় কাটার ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে অপপ্রচার চালাচ্ছেন ওই মহিলা।’
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-