উখিয়ার ঘাট কাস্টমস কর্মকর্তার অন্যরকম কারসাজি!

আবদুল্লাহ আল আজিজ, কক্সবাজার জার্নাল :

  • * নিলাম বাণিজ্যে নিজের পকেটভারী

  • * চালান ছাড়া হ্যান্ডক্যাশ লেনদেন

  • * রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার

উখিয়ার বালুখালী ঘাট কাস্টমস কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার দে অপরাধ ও অর্থনৈতিক দুর্নীতি কর্মকাণ্ড করেই চলেছেন। সে যোগদানের পর থেকে একের পর অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই।

যা নিয়ে রীতিমতো আলোচনা সমালোচনা চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

জানা যায়, এই কর্মকর্তা নিলামের নামে নাটক বানিয়ে সরকারকে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করে সিন্ডিকেটের সাথে আঁতাত করে নিজের পকেট ভারী করছেন।

গত ২২ জানুয়ারি (সোমবার) নাটকীয় নিলাম দেখিয়ে ৩০ লাখ টাকার ৬ হাজার একশো ৯৬ কেজি সুপারি ১৫ লাখ টাকায় আঁতাতের মাধ্যমে তার পছন্দের মানুষ চকরিয়ার জামাল সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করে দেন কাস্টমস এই কর্মকর্তা। নাটকীয় নিলামে সর্বোচ্চ মূল্যে ডাককারী হিসেবে দেখিয়ে তাকে দেওয়া হয়।

সুত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নিলাম ডাকে প্রায় সময় তার পছন্দের মানুষদের দাপটে নিলামে অংশ গ্রহণ করতে পারেনা স্থানীয় প্রকৃত ব্যবসায়ীরা। জিম্মী করে নিলাম ডাক নিজের অনুকুলে এবং নিজের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভাগিয়ে নেয়। এতে প্রকৃত ব্যবসায়ী ও পেশাদার নিলাম ডাককারীরা যেমনি নিলাম ডাকে অংশ নিতে পারেন না। যার ফলে জব্দ মালামালের ন্যায্য মুল্য পাওয়া থেকে বারবার বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। লাভবান হচ্ছে কাস্টমস কর্মকর্তা আর সিন্ডিকেট সদস্যরা।

অভিযোগ প্রকাশ, ৩০ লাখ টাকার সুপারি ১৫ লাখ টাকায় বিক্রির পেছনে তার লাভ ছিলো ২ লাখ টাকা। যা সে নিলামের আগেই গোপনে পকেটে ভরেছেন। এতে করে কাস্টমস কর্মকর্তা ব্যক্তিগত ভাবে লাভবান হলেও সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

অন্যদিকে, শহিদ এটিএম জাফর আলম (উখিয়া-টেকনাফ) সড়কে মালবাহী প্রতিটি গাড়ি থেকে সরকারিভাবে ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও তার নেতৃত্বে চালান ব্যবহার না করে হ্যান্ডক্যাশ টাকা নেওয়া হয়। এর থেকেও সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।

তাছাড়া, স্থানীয় কিছু পালিত সাংবাদিকের তালিকা করে প্রতি মাসে মাসোহারা দিয়ে তাদের মুখ বন্ধ রেখে বিভিন্ন অপকর্ম করতেছে যা সরকারের উন্নয়ন খাতে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।

এসব বিষয়ে উখিয়ার ঘাট কাস্টমস কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার দে বলেন, সুপারি গুলো গুদামে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো, তাই গুদাম খালি করতেই বিক্রি করে দিয়েছি।

এদিকে, তার এসব কর্মকাণ্ড ভাবিয়ে তুলেছে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের। তারা বলেন, সরকার তাদের কাজের জন্য মাসে মাসে বেতন সহ নানান সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন অথচ তারা তাদের ঈমানী দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে নিজের পকেট ভারী করে সরকারের ক্ষতি করে যাচ্ছে দিন দিন।

তারা আরও বলেন, তার এসব কর্মকাণ্ডের কারণে রীতিমতো সৎ কাস্টমস অফিসারদের বদনাম হচ্ছে। ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে সরকারের। তাই এসব দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

উল্লেখ্য, সুকান্ত কুমার দে এর আগে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে স্থানীয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাচার হয়ে আসা ৬১টি মহিষ বিজিবির হাতে জব্দের পর নিলামের নামে সরকারকে বিশাল অংকের টাকা থেকে রাজস্ব বঞ্চিত করে।

যেখানে সে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে ৩ দিন ঘুরিয়ে হতাশ করে ৮০ লাখ টাকার মহিষ ৩০ লাখ ৮০ হাজার টাকায় তার পছন্দের ক্রেতার সাথে আতাঁত করে পানির দরে দায়সারা ভাবে তুলে দিয়ে নিলাম কাজ সম্পন্ন করেছিলো।

আরও খবর