নিজস্ব প্রতিবেদক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার ১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপিকে ঋণখেলাপীর তালিকা থেকে বাদ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এই আদেশের মাধ্যমে নির্বাচন করতে সালাহউদ্দিন সিআইপির আর আইনী কোন বাঁধা নেই। গতকাল বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সালাহউদ্দিন আহমদ এর রিট মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিন্নাত হক এর দ্বৈতবৈঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাদির কৌশলী সিনিয়র আইনজীবী তৌফিকুল ইসলাম খান।
আইনজীবী তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, রিট মামলার আবেদনকারী সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি একসময় চট্টগ্রামের শিল্পপ্রতিষ্ঠান ফিস প্রিজারভাসের মালিক ছিলেন। কিন্তু ইতোপূর্বে তিনি ব্যাংক কতৃপক্ষকে অবগত করে নিজের শিল্প প্রতিষ্ঠানটি সকল দায়দেনাসহ বিক্রি করে দেন। এরই মধ্যে দিয়ে তিনি ফিস প্রিজারভাসের মালিক বা আর কেউ নন।
কিন্তু পরবর্তীতে ফিস প্রিজারভাসের নামে নেওয়া ঋণের বিপরীতে জনতা ব্যাংক চট্টগ্রামের লালদিঘি কর্পোরেট শাখার আইন কর্মকর্তা বাদি হয়ে চট্টগ্রাম অর্থঋণ (যুগ্ম জেলা জজ) আদালতে একটি মামলা রুজু করেন। ওই মামলায় সালাহউদ্দিন আহমদকে ৬ নম্বর বিবাদী করা হয়।
তিনি বলেন, সর্বশেষ গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতে মামলার শুনানিতে বিজ্ঞ বিচারক সংশ্লিষ্ট খেলাপি প্রতিষ্ঠানের মালিকানা না থাকায় মামলার ৬ নম্বর বিবাদী সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপিকে দায়ভার থেকে অব্যাহতি দিয়ে এব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে জনতা ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশনা আদেশ দিয়েছেন।
কিন্তু ব্যাংক কতৃপক্ষ যথাসময়ে আদালতের আদেশের কপি বাংলাদেশ ব্যাংকে না পাঠানোর কারণে ঋণখেলাপীর তালিকায় আগের মতো নাম রয়ে যায় সালাহউদ্দিন আহমদের।
রিটকারীর আইনজীবী তৌফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা গতকাল চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত কতৃক দেওয়া আদেশনামা বিজ্ঞ হাইকোর্টে (উচ্চ আদালত) তুলে ধরেছি। এসময় রিটকারীর অভিযোগ আমলে নিয়ে শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিন্নাত হক এর দ্বৈত বৈঞ্চ ঋণখেলাপীর তালিকা থেকে রিটকারী সালাহউদ্দিন আহমদের নাম বাদ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ, গত ৩ ডিসেম্বর রির্টানিং কর্মকর্তা ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। বাছাই শুনানীকালে বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক ঋণখেলাপীর তালিকায় নাম থাকায় কক্সবাজার ১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপির মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা দেন রির্টানিং কর্মকর্তা ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান। একই অনুষ্ঠানে রির্টানিং কর্মকর্তা কক্সবাজার ১ আসনের আরও চারজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন।
এই অবস্থায় রির্টানিং কর্মকর্তা কতৃক প্রার্থীতা বাতিল ঘোষণার বিরুদ্ধে গত ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে একটি আপিল অভিযোগ জমা দিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমদ। আগামী ১০ ডিসেম্বর এব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক ঋণখেলাপীর অভিযোগে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে নির্দেশনা চেয়ে গতকাল বুধবার (৬ ডিসেম্বর) হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন (মামলা) দাখিল করেন আবেদনকারী সালাহউদ্দিন আহমদ।
একইদিন হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিন্নাত হক এর দ্বৈত বৈঞ্চে রিট মামলার শুনানি শেষে একই বিষয়ে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত কতৃক সালাহউদ্দিন আহমদকে
দায়ভার থেকে অব্যাহতি দিয়ে দেওয়া আদেশ বহাল রেখে ঋণখেলাপীর তালিকা থেকে রিটকারী সালাহউদ্দিন আহমদের নাম বাদ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছেন।
রিটকারীর আইনজীবী তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিজ্ঞ হাইকোর্ট কতৃক ঋণখেলাপীর তালিকা থেকে সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপিকে বাদ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশনার দেয়ার মধ্যদিয়ে কক্সবাজার ১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপির আর আইনী কোন বাঁধা নেই।
জানা গেছে, গত ২৬ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার ১ (চকরিয়া পেকুয়া) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রাথী হিসেবে সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপিকে দলীয় মনোনয়ন দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-