বৃত্তি পরীক্ষায় বিকশিত হচ্ছে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত পালংখালীর শিক্ষার্থীদের মেধা!

আবদুল্লাহ আল আজিজ,ইমরান আল মাহমুদ, কক্সবাজার জার্নাল:


কক্সবাজারের উখিয়ায় ‘থাইংখালী শিক্ষক পরিবার’ একটি পরিচিত নাম। আর এ সংগঠনটি অন্যান্য কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষার আলো ছড়াতে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম বারের মতো উখিয়ার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত থাইংখালীএলাকায় প্রাথমিক পর্যায়েয় তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম শ্রেণির স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজন করেছে। যা দীর্ঘদিন পর শিক্ষার বিস্তরণে অনন্য ভুমিকা রেখেছে।

শনিবার(২ ডিসেম্বর) সকালে থাইংখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪৩৯ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এতে উর্ত্তীর্ণ হয়েছেন মোট ৫২ জন৷ সেখানে তৃতীয় শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছেন ৪ জন এবং সাধারণে ১০ জন৷ চতুর্থ শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছেন ৬ জন এবং সাধারণে ১১ জন এবং পঞ্চম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছেন ৮ জন এবং সাধারণে ১৩ জন৷

বৃত্তি পরিক্ষায় অংশ নেওয়া হলিচাইল্ড একাডেমির ছাত্রী মাহিয়া সুলতানা মাহিয়াজানান,”পরীক্ষা দিতে পেরে তাঁরাও বেশ আনন্দিত। আমরা এরকম বৃত্তি পরীক্ষা আরও দিতে চাই।”

ঝাঁকঝমকপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হওয়া মেধাবৃত্তি পরীক্ষা পরিদর্শনে আসেন পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন। তিনি বলেন,”প্রতিযোগিতা মূলক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার বিকাশ হয়। তাই শিক্ষক পরিবারের এই উদ্যোগ প্রত্যন্ত এই অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়াবে। আমরা সবসময় শিক্ষক পরিবারের সাথে ছিলাম,আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।”

পরে পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন, থাইংখালী বিট কর্মকর্তা বিকাশ দাশ, পালংখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম এ মনজুর ও এডভোকেট এম এ মালেক।

থাইংখালী বিট কর্মকর্তা বিকাশ দাশ বলেন, “ভবিষ্যত প্রজন্ম তৈরিতে মেধাবী প্রজন্মকে চিহ্নিত করার পাশাপাশি এই বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরাও উৎসাহিত হবে।”

এডভোকেট এম এ মালেক বলেন, সুস্থ প্রতিযোগিতা মানুষকে সাহসী করে। মেধার প্রতিযোগিতায় আমাদের পালংখালি ইউনিয়নের কোমলমতি শিশুরা, তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করি।

রোহিঙ্গা আগমনের ফলে শিক্ষায় পিছিয়ে পড়ে এলাকাটি। আর পূণরায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষক পরিবারের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস বলে জানান সংগঠনটির সভাপতি কামরুদ্দিন মুকুল।

তিনি বলেন, থাইংখালী এলাকার পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের মেধাবৃদ্ধি এবং প্রতিযোগী শিক্ষায় অগ্রসর করতে থাইংখালী শিক্ষক পরিবারের উদ্যোগে বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। এখন থেকে প্রতি বছর সংগঠনের নিজস্ব তহবিল থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে বৃত্তি প্রদান করা হবে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যহত থাকবে।

উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ দায়িত্ব পালন করেন এবং থাইংখালী শিক্ষক পরিবারের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, চলমান সময়ে বেসরকারি উদ্যোগে শিক্ষকদের মাধ্যমে এমন বৃত্তি পরীক্ষাটি আয়োজন করাতে আনন্দিত শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকগণ।

অভিভাবকেরা থাইংখালী শিক্ষক পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানান, এই আয়োজন প্রশংসার দাবীদার। শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ করার জন্য এ ধরনের আরও আয়োজন বাস্তবায়ন হলে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় মনোযোগী হবে এবং উৎসাহিত হবে। তারা প্রত্যাশা করছেন আগামীতে যেন পুরো উখিয়া উপজেলা ব্যাপী এই বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়।

আরও খবর