রাজু দাশ, চকরিয়া •
নাশকতা রোধে অবৈধভাবে পেট্রল ও অকটেন বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সরকার। তবে কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায় কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিক্রি করছে অকটেন, পেট্রল ও এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাস।
রাস্তার পাশে সারি সারি সাজানো বোতলের বাহারি রং দেখলেই মনে হবে সরকারি অনুমোদন নিয়েই বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। অনুমোদন ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই পেট্রোল-অকটেন ও এলপিজি সিলিন্ডার ছোট মুদি দোকান থেকে শুরু করে সেলুনেও মিলছে এসব দাহ্য পণ্য।
এভাবে যত্রতত্র দোকান থেকে অকটেন ও পেট্রোল কিনে দূর্বৃত্তরা যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
গত সোমবার উপজেলার সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে ছোট দোকানগুলোতে প্লাস্টিকের বোতলে করে বিক্রি হচ্ছে পেট্রল-অকটেন। এইসব দোকানে নেই কোনও আগুন নির্বাপক যন্ত্র, আবার থাকলেও সেটা রাখা হয় অন্য জায়গায়। যে কোনো সময় দূর্ঘটনা ঘটলে তার প্রতিকারের নিয়ম জানা নেই এইসব ব্যবসায়ীদের। উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন হাটবাজার এমনকি গ্রামের মুদি ও চায়ের দোকানেও বিক্রি হচ্ছে এসব দাহ্য পদার্থ।
দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা দোকানের সামনে রাস্তার ওপর টেবিল দিয়ে অকটেন-পেট্রোল বোতলজাত করে সাজিয়ে রাখে। পাশাপাশি ২-৩টি দোকান থাকলে কে কার চেয়ে বেশি বিক্রি করবে সে প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত থাকে। আবার অনেকের দালালও রয়েছে। খোলা বাজারে বিক্রিকৃত তেল দ্বারা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটেছে। হরতাল অবরোধের সময় খোলা বাজারে তেল বিক্রি তো দূরের কথা পেট্রোল পাম্পেও বোতলে করে তেল বিক্রি করা নিষিদ্ধ। এসব আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যে যার মতো করে এসব বিক্রি করে যাচ্ছে।
চকরিয়া পুরাতন বাস টার্মিনাল এলাকার পেট্রোল পাম্পে এক কর্মচারী বলেন, এই পেট্রোল পাম্প থেকে রাস্তার ধারের দোকানদার ও মুদি দোকানদের কাছে কোনো খোলা তেল বিক্রি করা হয় না। তারা বিভিন্ন পাম্প থেকে পেট্রোল ও ডিজেল সংগ্রহ করেন বিভিন্ন কায়দায়।
জানা যায়, কোনো নিয়ম না মেনে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে, আবার কেউ অনুমোদন ও অগ্নিনির্বাপন ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়াই এ জ্বালানি ও পেট্রোল ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক ছুট্টু জানান, আইনের উর্ধ্বে কেউ নাই। আমি উপজেলা প্রশাসনকে এবিষয়ে অবগত করব। আশাকরি খুব দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।
চিরিঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ- পরিদর্শক খোকন কান্তি রুদ্র বলেন, হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি পেট্রোল পাম্পে নোটিশ টানানো হয়েছে। সেটি যদি না মেনে কেউ জ্বালানি বিক্রি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয়তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনের কর্মকর্তা মোঃ সেলিম উদ্দিন জানান, খোলা বাজারে তেল বিক্রি করতে হলে ছাড়পত্র ও লাইসেন্স নিতে হবে। শর্ত মোতাবেক মালামাল নিতে হবে। আর খোলা বাজারে তেল বিক্রির জন্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সংশিষ্ট বিভাগ থেকে অনুমোদন নিতে হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, খুব শীঘ্রই এসব অবৈধ দোকান বন্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। যারা নিয়মনীতি না মেনে জ্বালানি তেল বিক্রি করছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-