ডেস্ক রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আসনভিত্তিক ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ৩০০ আসনের এই তালিকা বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) চূড়ান্ত করা হয়। মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। তাদের মধ্যে নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২, পুরুষ ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৮৫২ জন। তফসিল ঘোষণার আগেই এগুলোর মুদ্রণ ও সিডি প্রস্তুতের কাজ সম্পন্ন হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীর বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের পক্ষে এ তথ্য প্রকাশ করেন।
গত মার্চে হালনাগাদ শেষে দেশের ভোটার ছিল ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। এরপর সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তরুণদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ দিয়েছিল ইসি। এতে দেশে নতুন করে মোট অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ৫ লাখ ৪০ হাজার ১৯৩ জন।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে নির্বাচন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ প্রস্তুতের অগ্রগতি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ’অ্যাপটি ১২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনুষ্ঠানে দেশের আইসিটি ব্যক্তিত্বদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।’
নির্বাচন কমিশন থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই এই অ্যাপ চালু করা হবে। এর মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ থাকবে। সেক্ষেত্রে ১২ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে যেকোনো দিন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলে কমিশন সচিবালের কর্মকর্তাদের ধারণা। তার আগে ৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবেন নির্বাচন কমিশনাররা।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, নির্বাচন ব্যবস্থাপনা অ্যাপ তৈরির জন্য প্রায় ২১ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যার কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আর সফটওয়্যার তৈরিতে ব্যয় হবে ৯ কোটি ৯ লাখ টাকা। এই অ্যাপে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল, ভোটকেন্দ্রের অবস্থান, কত ভোট পড়েছে—এসব তথ্য প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর জানা যাবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিলে অনেক বিষয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে যাবে। নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোর নামের তালিকা ও ছবি থাকবে। কে কোথায় কোন কেন্দ্রে ভোট দিতে যাবেন, এ তথ্যও থাকবে। এজন্য এনআইডি নম্বর দিয়ে অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এ ছাড়া গুগল ম্যাপেও ভোটার তার ভোটকেন্দ্র দেখতে পারবেন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের নামের তালিকা থাকবে। মোবাইল ফোনে এই অ্যাপ ডাউনলোড করে প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর কেন্দ্রভিত্তিক ফল এ অ্যাপে দেখা যাবে। বেসরকারি চূড়ান্ত ফলও দেখা যাবে।
তবে প্রশ্ন রয়েছে ভোটের দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকলে এই অ্যাপের কার্যকারিতা নিয়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় গুজব ও অপপ্রচার এড়ানোর জন্য ভোটের দিন ইন্টারনেট বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এখনও ইন্টারনেট চালু রাখার পক্ষে। গত বছর ৯ জুন নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সংলাপে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, নির্বাচনকে অস্বচ্ছ করতে ‘ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট’ হলে নির্বাচনকে ‘ব্ল্যাকআউট’ (বন্ধ) করে দেওয়া হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-