উখিয়ায় সিন্ডিকেটের কারসাজি ও কাস্টমস কর্মকর্তার গড়িমসিতে নিলাম বাধাগ্রস্ত!

আবদুল্লাহ আল আজিজ, কক্সবাজার জার্নাল •

মিয়ানমার সীমান্ত থেকে স্থানীয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাচার হয়ে আসা ৬১টি মহিষ জব্দের দু’দিন পেরিয়ে গেলেও কাস্টমস অফিসারের গাফেলতি ও রহস্যজনক ভূমিকার কারণে নিলাম হয়নি।

এতে করে একদিকে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, স্থানীয় এক পাচারকারী সিন্ডিকেট মিয়ানমারের সিন্ডিকেটের সাথে যোগসাজশ করে সীমান্তের চোরাই পথ দিয়ে মহিষ নিয়ে আসছিলো।

এমতাবস্থায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র চৌকস আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে গত ৯ অক্টোবর (সোমবার) মহিষগুলো জব্দ করে বিওপিতে নিয়ে আসে। পরে জব্দ তালিকা করে বালুখালী ঘাট কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে।

পরে বালুখালী ঘাট কাস্টমস কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার দে মঙ্গলবার নিলামের আয়োজন করলেও সরকারী নিয়মানুযায়ী পর্যাপ্ত নিলাম মূল্য না হওয়ায় উক্ত নিলাম সেদিনের মতো বাতিল করে পরের দিন আবার ১১ অক্টোবর (বুধবার) দুপুর ২টায় নিলামের সময় ঘোষণা করে। এতে করে দ্বিতীয় দিনও নির্ধারিত শিডিউল সময়ে প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী নিলামে অংশগ্রহণ করার জন্য দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসে।

কিন্তু এবার কাস্টমস কর্মকর্তা নির্ধারিত সময়ে না এসে বিকেল ৫ টায় এসে তড়িঘড়ি করে ঘোষণা দেন উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আজকের নিলাম কার্যক্রম বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হবে। ফলে গত দু’দিন ধরে দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা চরম দুর্ভোগে পড়ে যায় এবং ক্ষোভ প্রকাশ করে।

এদিকে জানা যায়, সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে আসা মহিষগুলো পালংখালীর একটি সিন্ডিকেট ও জনৈক আওয়ামী লীগ নেতা এম. মনজুর তার আত্মীয়স্বজনদের দাবী করে নিলাম কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা চালায় এবং বাধা সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন স্থানে তদবির শুরু করে।

এদিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহিষগুলো স্থানীয়দের নয় বলে নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে চোরাই পথে আসার সময় ৬১ মহিষ জব্দ করা হয়।

নিলামে অংশ নিতে আসা স্থানীয় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দীন বলেন, সারাদিনের অন্যান্য কাজ বাদ দিয়ে নিলামের খবরে অংশ নিতে নির্দিষ্ট সময়ে আগে ছুটে আসি। কিন্তু প্রায় ৪ ঘন্টা বসে থাকার পর কাস্টমস কর্মকর্তা এসে বলে আজ নিলাম হবে না কাল আসেন। যা খুবই বিরক্তিকর ও দুর্ভাগ্যজনক। কাস্টমস কর্মকর্তার সময় জ্ঞান নেই বললেই চলে।

অপরদিকে ৬১ টি মহিষ বালুখালী বিওপিতে পড়ে থাকায় রুগ্ন হয়ে পড়ছে। যা অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সরকারের অর্ধকোটি রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে বালুখালী ঘাট কাস্টমস কর্মকর্তা সুকান্ত কুমার দে বলেন, আজকে নিলাম হওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী আজকের নিলাম বাদ দিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হবে।

আরও খবর