কক্সবাজার সদর হাসপাতালে বাড়ছে রোগী: ধারাবাহিকতা রক্ষায় নতুন তত্ত্বাবধায়কের অঙ্গিকার

আবু সায়েম •

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে বিদায়ী তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোমিনুর রহমান ও সদ্য যোগদানকৃত তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিং ঞো’র সাথে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নিয়ে কথা বলছেন দৈনিক বাঁকখালীর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ও চীফ রিপোর্টার আবু সায়েম
  • প্রয়োজন আরো ১০০ চিকিৎসক

  • সংযুক্ত হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি

  • রাজস্ব বেড়েছে দ্বিগুণ

কক্সবাজার সদর হাসপাতাল নিয়ে মানুষের অসন্তোষ দীর্ঘদিনের।
কিন্তু তারপরেও সদর হাসপাতালই জেলা চিকিৎসার শেষ ভরসা স্থল হয়ে উঠেছে।

প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী সদর হাসপাতালে ছুটে আসছেন। কেউ যাচ্ছেন জরুরি বিভাগে,কেউ আবার নবপ্রতিষ্ঠিত বহি:বিভাগে সেবা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

গতকাল কক্সবাজার সদর হাসপাতালের বদলিকৃত তত্বাবধায়ক ডাঃ মো. মোমিনুর রহমান দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন নতুন তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মং টিং ঞো’র কাছে।

এদিনে হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতা ২৫০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি হয় ৮৫১ জন রোগী।অর্থাৎ ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ বেশি রোগী।
দায়িত্ব হস্তান্তর শেষে দুই তত্বাবধায়ক দৈনিক বাঁকখালীর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ককে প্রশ্ন করা হয় হাসপাতালের প্রধান সমস্যা কি? সাবেক তত্ত্বাবধায়ক উত্তর দিলেন, এখন পর্যন্ত প্রধান সমস্যা হচ্ছে, দালাল ও বহিরাগতরা।

তিনি জানান, তাঁর সময়ে দালাল ও বহিরাগতদের ঠেকানোর ফলে হাসপাতালের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, বহিঃবিভাগে সেবা নেয়া রোগীর সংখ্যা ২০২১-২০২২ সালে ছিলো ২ লক্ষ ২৪ হাজার জন।২০২২- ২০২৩ অর্থ বছরে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ লক্ষ ৯৮ হাজার জনে। এভাবেই সব বিভাগে সেবা প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

হাসপাতালে বিশ্ব মানের জরুরি বিভাগ, ডেডিকেটেড হৃদরোগ বিভাগ , আধুনিক বহির্বিভাগ ভবন, আধুনিক ল্যাব,১২৮ স্লাইসের সিটি স্ক্যান , বৈকালিক বিশেষজ্ঞ সেবাসহ অনেক সেবা সংযুক্ত হয়েছে। এসবকিছু হাসপাতালকে একটি ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে গেছে।

ডাঃ মোমিনুর বলেন, তাঁর সময়ে সরকারি কোষাগারে দ্বিগুণ অর্থ জমা হয়েছে। ২০২১- ২০২২ সালে সরকারি কোষাগারে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ছিলো ২ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকার বেশি। ২৯২২-২০২৩ অর্থ বছরে তা দ্বিগুণ বেড়ে হয় ৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।

তত্বাবধায়কদের প্রশ্ন করা হয়, হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত রোগীরা বিশেষজ্ঞদের পান না কেন। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক বলেন,প্রতিটি ওয়ার্ডে ডাক্তার আছেন।তবে অপারেশনসহ অনেক সেবা দিতে হয় বলে রোগীরা পর্যায়ক্রমে সেবা পেতে দেরী হয়।

নতুন যোগদানকৃত তত্বাবধায়ক ডাঃ মং টিং ঞো জানান, হাসপাতালে বর্তমানে ৭০ জন চিকিৎসক রয়েছেন। তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, কক্সবাজারে ২৮ লক্ষ স্থানীয়’র সঙ্গে ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা ও ২ লক্ষ পর্যটক মিলিয়ে প্রায় ৪২ লক্ষ মানুষ রয়েছে ।

এতো বিপুল পরিমাণ মানুষের বিপরীতে ৭০ জন ডাক্তার অপ্রতুল। সেজন্য আরো ১০০ জন চিকিৎসকের প্রয়োজন। তিনি এসময়ে সংবাদকর্মীদেরকে সমস্যাগুলোকে মিডিয়ায় তুলে ধরে হাসপাতালকে সাহায্য করার অনুরোধ করেন। তিনি আরো বলেন,হাসপাতাল যখন ৫০০ শয্যায় উন্নীত হবে তখন অনেক সমস্যার সমাধান হবে।

আরও খবর