ডেস্ক রিপোর্ট •
কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার হওয়া দস্যু সর্দার খাইরুল বশর সুমনকে তিনদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে তাকে কক্সবাজার সদর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক শ্রীজ্ঞান তঞ্চ্যঙ্গা এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
খাইরুল বশর সুমন মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া দ্বীপের মৃত মোস্তাক আহমদের ছেলে। সুমন প্রথম দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের একজন।
এর আগে গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম শহরে অভিযান চালিয়ে সুমনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, গ্রেফতারের পর সুমনকে কক্সবাজারে আনা হয়েছে। গত ২৩ এপ্রিল ১০ মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে সুমন আত্মগোপনে চলে যায়। এরপর পরিচয় গোপন করতে মুখে দাঁড়ি রেখে ছদ্মবেশ ধারণ করে। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ২৩ এপ্রিল গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ট্রলার সাগরে ভাসমান থাকা নামবিহীন একটি ট্রলার নাজিরারটেক উপকূলে নিয়ে আসে। ওই ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল নামবিহীন ট্রলারটির মালিক নিহত সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৬০ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে ৬ জন ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন, মামলার এজাহারের প্রধান আসামি বাইট্টা কামাল, বাঁশখালীর বাসিন্দা ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি, মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেন, চকরিয়ার বদরখালী এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন মুনির, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সাইরার ডেইল এলাকার এস্তেফাজুল হকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন।
তবে গ্রেফতারের মধ্যে মামলার ৪ নম্বর আসামি করিম সিকদার ও বাইট্টা কামালের ভাই ইমাম হোসেন জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
ঘটনার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর থেকে তদন্তে দস্যু সর্দার সুমনের নাম নানাভাবে আসতে থাকে। এরপর থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান শুরু করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন অস্ত্র-সরঞ্জাম ও অর্থ জোগান দিয়ে ৭ এপ্রিল ১২-১৩ জনের একটি গ্রুপকে সাগরে ডাকাতির উদ্দেশে পাঠিয়েছিল বলে স্বীকার করেছে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছিল ঘটনায় নিহত ট্রলার মালিক শামসুল আলম মাঝি। জিজ্ঞাসাবাদে সুমন বলেছে- ‘আমি তাদের ডাকাতি করতে পাঠিয়েছিলাম, মরার জন্য নয়।’
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-