উখিয়া-টেকনাফের মানবপাচার চক্রের হোতা সেনাম উল্লাহ!

বিশেষ প্রতিবেদক •

উখিয়া-টেকনাফে ফের দেখা দিয়েছে অসংখ্য মানবপাচারকারী
সিন্ডিকেট। তারা একাধিক পয়েন্ট দিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচার করছে শিশুসহ যুবক-বৃদ্ধদের।

উঠতি বয়সের তরুণ তরুণীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেখিয়ে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার আকৃষ্ট করছে এসব সিন্ডিকেটের দালালরা।

সম্প্ৰতি উখিয়া জালিয়াপালং ইউনিয়নের জুম্মাপাড়া এলাকায় বসবাসরত সেনাম উল্লাহ প্রকাশ বার্মাইয়া সানাউল্লাহ মানবপাচারের বিশাল সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন।

প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ছেনাম উল্লাহর ভয়াবহ
তথ্য। মানবপাচারের গোপনীয়তা রক্ষার্থে ছেনাম উল্লাহ টেকনাফ
এবং উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নে দুইটি ঝুপড়ি ঘর তৈরি
করেছেন। এতে গ্রামগঞ্জে ছিটিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় অসংখ্য দালালদের।

তারা এক মাথা ২০ হাজার টাকা করে ছেনাম উল্লাহকে বিক্রি করে।
সেখান থেকে ছেনাম উল্লাহ একসাথে ১০ জন জড়ো করে চেরাং ঘাট হয়ে টেকনাফ নিয়ে পরে মায়ানমারের যায়। পরে পাচারকারীদের বিক্রি করে প্রতি মাথা ৩০ হাজার টাকা করে।

মায়ানমারে তাদের ঝুপড়ি ঘরে রেখে পরিবার থেকে কয়েকদফা
টাকা আদায় করা হয়। সেখানে তাদের প্রয়োজনীয় টাকা আদায়ের
পরে নিয়ে যাওয়া হয় থাইল্যান্ড। সেখানেও এসব পাচার চক্রের
সিন্ডিকেট তারা তাদের ঝুপড়ি ঘরে আটকিয়ে রেখে টর্চারের মাধ্যমে
মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের অবৈধভাবে মালয়েশিয়ার বর্ডারে
ফেলে দিয়ে আসে। সেখানে কেউ আটক হয় কেউ পালিয়ে অন্যন্য
জায়গায় চলে যায়।

ধারাবাহিকভাবে পাচার হওয়া এসব চক্রে রয়েছে আন্তর্জাতিক
মাফিয়ারা। সেই মানবপাচারের আন্তর্জাতিক মাফিয়ার অন্যতম
সদস্য জালিয়াপালং ইউনিয়নের বর্মায়া ছেনাম উল্লাহ।

তার সাথে জড়িয়ে আছে স্থানীয় কিছু দালাল টাইপের প্রভাবশালী। যারা প্রতিনিয়ত তাকে এ কাজে সহযোগিতা ও ইন্ধন দিচ্ছে। তাদের ফাদে পড়ে অনেক অসহায় পরিবারে আজ কান্নার রোল পড়েছে। কিন্তু প্রভাবশালী চেয়ে চক্রের পাতানো ফাদ আর সন্তানদের ফিরে পেতে চুপ হয়ে আছে।

তাই একজন মানবপাচারকারী দিনের পর দিন অন্যায় করেও এলাকায় বীরদর্পে কিভাবে চলাফেরা করছে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

তাই আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের অন্যতম হুতা সেনাম উল্লাহকে গ্রেফতারে বেরিয়ে আসবে উখিয়া টেকনাফে মানবপাচারের
সিন্ডিকেটের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

তথ্য গোপন রেখে কক্সবাজার জার্নালের একটি অনুসন্ধানী টিমের সাথে সাক্ষাতে কথা হয় ছেনাম উল্লাহর। সেখানে তিনি এসব তথ্য স্বীকার করেন।

এ ছাড়া তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে কয়েকদফা গ্রেফতার হয়ছিল। কিন্তু স্থানীয় কিছু দালাল ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তারা তাকে ভালো মানুষ সাজিয়ে নিয়ে আনার অভিযোগও রয়েছে।

এছাড়া গেল মাসখানেক আগে উখিয়া উপজেলা আইনশৃঙ্খলা
মিটিংয়ের সভায় বিরুদ্ধে মানবপাচারকারীদের জনপ্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার
নির্দেশ দিয়েছিলেন নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসাইন সজীব।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী জানায়, এসব
তথ্য উপাথ্য নিয়ে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ করলে তদন্তপুর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর