রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের আস্তানা: তথ্যমন্ত্রী

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের আস্তানা: তথ্যমন্ত্রী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আয়োজিত সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ

রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলো এখন মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের আস্তানা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আয়োজিত সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবা‌বে এমন মন্তব‌্য ক‌রেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পগুলো থেকে ধর্মান্ধগোষ্ঠী এবং সন্ত্রাসীগোষ্ঠী রিক্রুটমেন্ট করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এটির কারণে সেখানে সামাজিক সমস্যা, আইনশৃঙ্খলাগত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান না হওয়াটা শুধু বাংলাদেশের জন্য হুমকি নয়, পুরো অঞ্চলের জন্য হুমকিস্বরূপ।

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালেও সব রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে পারেনি। বিএনপি ৯১ সালে যেমন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে পারেনি, এর আগে ৭৬-৭৭ সালে যখন এসেছিল তখনও সব রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে পারেনি। তখনকার হাজার হাজার রোহিঙ্গা এখনো বাংলাদেশে রয়ে গেছে। তারা নিজেরাই যখন ক্ষমতায় ছিল তখন এ সমস্যার সমাধান সঠিকভাবে করতে পারেনি।

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকা প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, আন্তর্জাতিক মহল থেকে যে ধরনের চাপ মায়ানমারের উপর প্রয়োগ করা প্রয়োজন, সেই চাপ আমরা লক্ষ্য করছি না। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি চীনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একইভাবে ভারতের সঙ্গেও আমরা আলাপ আলোচনা করেছি। তারাও মিয়ানমারকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। আমরা আশা করছি এ সমস্যার সমাধান হবে।

রোহিঙ্গারা শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা বিশ্বের সমস্যা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে আমার গ্রামের বাড়ি। কিন্তু সেখানেও রোহিঙ্গারা চলে এসেছে। তা‌দের কারণে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে, অপরাধ বাড়ছে। ক্যাম্পগুলো মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের আস্তানা হয়ে যাচ্ছে।

মিয়ানমারের জান্তা সরকার দায়িত্বশীলের মতো কাজ করছে না মন্তব্য করে আওয়ামী লী‌গের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, কয়েকজন করে রোহিঙ্গা দেশে নিয়ে যাওয়া কোনো সমাধান নয়।

বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায়বিচার চায় জানিয়ে সম্প্রচ‌ারমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে সরকার। সেখানে বেশ খানিকটা অগ্রগতিও হয়েছে। সরকার মনে করে এই মানবিক সমস্যার সমাধান খুবই জরুরি।

ব্রিকসের বাংলাদেশের সদস্য পদ না পাওয়ার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ব্রিকসে নেয়া হয়েছে। সদস্য পদ না হওয়া কোনো বিষয় না। ব্রিকসে পর্যায়ক্রমে আমন্ত্রিত দেশগুলোকে সদস্য পদ দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গণহত্যা ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে ২০১৭ সালের আগস্টের ২৫ আগস্ট তারিখ থেকে বাংলাদেশ অভিমুখে ঢল নামে রোহিঙ্গাদের। প্রাণ বাঁচাতে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসে। এর আগে থেকেই অন্তত তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছিল। বর্তমানে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।

আরও খবর