মিশ্র প্রতিক্রিয়া

উখিয়ায় আলোচনা সভা নিয়ে ছাত্রলীগের কোন্দল প্রকাশ্যে!

ইমরান আল মাহমুদ, কক্সবাজার জার্নাল •

উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এখন দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে করে সাধারণ কর্মীদের দলপ্রেমীদের হতাশাগ্রস্থ করে তুলছে বলে জানা যায়।

সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ মার্চ মধ্যরাতে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান স্বাক্ষরিত প্যাডে তারেক হোসেন মানিক কে আহবায়ক ও ২১জন যুগ্ম আহবায়ক সহ ২৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পরপরই শুরু হয় কোন্দলের সূচনা।

মাঠ পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মীরা দুইভাগে বিভক্ত। একপক্ষ জেলা সভাপতি সাদ্দাম হোসাইনের অনুসারী ও অপরপক্ষ সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানের অনুসারী। শুরুতে-ই ঘোষিত কমিটির যুগ্ন আহবায়ক সালাহ উদ্দিন নিজস্ব অনুসারী কর্মীদের নিয়ে শোডাউন করাটাকে দুষলেও পরে তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনে সেটির দূরত্ব কমে আসে। আহবায়ক মানিক ও সালাহ উদ্দিন দুজনে-ই আলাদা ব্যক্তি অনুসারী হলেও রাজনীতির মাঠে কমিটি ঘোষণার পরপরই একসাথে মিছিল,মিটিংয়ে সক্রিয় অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়।

সর্বশেষ, গত বুধবার দেখা দেয় কোন্দল। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ সর্বত্র আলোচনা সমালোচনার ঝড় তুলেছে।

জানা যায়, আগামী ১৫ আগস্ট শোক দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের একটি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয় কোর্টবাজার এন আলম শপিং কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায়। ঐদিন বিকেলে অনুষ্ঠিত সভার রেজুলেশন খাতার কার্যবিবরণী সহ উপস্থিতির সাক্ষর করা খাতার পৃষ্ঠাটি প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী,তারেক হোসেন মানিক, সালাহ উদ্দিন, মো. ইব্রাহীম, মো. মুবিন চৌধুরী, মোহাম্মদ মোরশেদ, জিয়াউল হক,আনোয়ার ইসলাম, মিজানুর রহমান আরিয়ান ও আসাদ চৌধুরী ঐ সভায় উপস্থিত ছিলেন। ১৫ আগস্ট শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে উপজেলা ছাত্রলীগ মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একইদিন সন্ধ্যায় কোর্টবাজার দোকান মালিক সমবায় সমিতির অফিসে বৈঠকের ছবি যোগ করে “১৫ আগস্ট শোক দিবস উপলক্ষ্যে উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের আলোচনা সভা” ক্যাপশন দিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট করেন যুগ্ন আহবায়ক জামাল। ছবিতে উপস্থিতিদের মধ্যে ছিলেন তারেক হোসেন মানিক,আলমগীর আলম নিশা, মারুফ হোসেন খোকা, জামাল, ছৈয়দ উল্লাহ কায়ছার, মুবিন চৌধুরী, মিজানুর রহমান আরিয়ান।

এরপরই শুরু হয় কোন্দল। যা দৃশ্যমান হয়ে নানা সমালোচনার জন্ম দেয়। স্বাভাবিকভাবে প্রকৃত মাঠ পর্যায়ে ত্যাগ, পরিশ্রম দেওয়া কর্মীদের মাঝে হতাশার সৃষ্টি করছে বলে জানা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মী জানায়, আমরা ছাত্রলীগে কোনো বিশৃঙ্খলা, দ্বন্দ্ব আশা করিনা। রাজনীতিতে সবাই এক হয়ে কাজ করবে সেরকম সুসংগঠিত ছাত্রলীগ চায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন্দল বা মিটিং রেজ্যুলিউশনের বিষয়ে আলোচনা সমালোচনার কারণ বা রহস্য কি সে বিষয়ে জানতে চাইলে ১নং যুগ্ন আহবায়ক সালাহ উদ্দিন জানান,”১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উদযাপনের জন্য উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক একটা আলোচনা সভার আহবান করছিলো কমিটির নেতৃবৃন্দদের নিয়ে বিকেল চারটায়। চারটায় কেউ উপস্থিত না হওয়ার কারণে সাড়ে চারটার দিকে প্রোগ্রাম শুরু করি। ২৬ জন নেতাকর্মীদের মধ্যে ৬ জন উপস্থিত হওয়ায় কোনো ছবি তোলা হয়নি তবে রেজুলেশনে স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়। কোন্দলের কারণের বিষয়ে তিনি বলেন,” রেজুলেশন শেষে অন্য একটা বৈঠকের ছবি ফেইসবুকে দিলে তারপর শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। ছবিতে আমাকে না দেখে অনেকে দুইবার বৈঠক হয়েছে সেটা নিয়েও বিব্রত অবস্থায়। বিষয়টি এখনও জেলা কমিটি বরাবর জানানো হয়নি বলে জানান তিনি।”

একইদিনে দুটি আলোচনা সভার কারণ জানতে একাধিকবার আহবায়ক তারেক হোসেন মানিকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে, ছাত্রলীগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা বিষয়টি সমাধানে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সম্পাদকের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

আরও খবর