হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া :
টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে ডুবেছে উখিয়ার নিম্নাঞ্চল। বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাট, অলিগলি ও নিচু এলাকার ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। দোছড়ি রাস্তার মধ্যখানে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়। ফলে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল।
বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকেই আকাশ পরিস্কার দেখা যায়। ভোর রাত থেকেই বৃষ্টি না হওয়ায় বাড়িঘর ও ওঠান থেকে পানি নেমে যেতে শুরু করেছে।
গতকালও বিভিন্ন এলাকায় হাটু থেকে কোমর সমান পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। বুধবার থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষের জীবনে স্বাভাবিকতা ফিরে এসেছে।
তবে ভারি বর্ষণে মাথা গোছার মাটির ঘরটি ভেঙে গেছে আব্দুল করিমের। তার দুই মেয়ে। বড় মেয়ে প্রতিবন্ধী। বাবা মা এবং স্ত্রী নিয়ে তার সুখের পরিবার।করিমের সংসার চলে মুরগি ও কবুতর বিক্রি করে। অভাবের সংসাবে তার বৃদ্ধ বাবা মাকে কষ্ট পেতে দেননি কখনো। তার শত কষ্টের মাঝে পরিবারের মুখে হাঁসি ফুটাতে ধার দেনা করে ও নিজের উপার্জিত জমানো ৫ লাখ টাকা খরচ করে টিনের ছাউনি দিয়ে বাসযোগ্য একটি স্বপ্নের মাটির ঘর তৈরি করে সে। একটানা বৃষ্টিতে তার স্বপ্নের মাটির ঘরটি পানিতে তলিয়ে গেছে।
উখিয়া রাজা পালং ইউনিয়নের পূর্ব সিকদারবিল এলাকার আব্দুল করিম জানান, তার প্রতিবেশি মাস্টার কামাল উদ্দিন বহুতল বাড়ি নির্মানের সময় পানি চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়ে পানি নিস্কাশনের ব্যবসথা না রাখায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
গতকাল সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বৃদ্ধ বাবা-মা, ছোট ভাই-বোন আর স্ত্রী সন্তান নিয়ে অসহায় আব্দুল করিম কান্নায় ভেঙে পড়ে। তার একমাত্র মাথাগোছার মাটির ঘরটি পানিতে তলিয়ে গেছে।
তার আরেক ভাই রেজাউল করিম জানান, পানিতে ভেঙে গেছে মাটিরঘর। আমার বাড়িতে আজ চার দিন ধরে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। যতদিন সে আগের অবস্থায় ফিরে না যাবে ততদিন তারা আমার বাড়িতে থাকবে।
ছাপা ইয়াছমিন বলেন, আব্দুল করিম খুব কষ্ট করে একটি মাটিরঘর তৈরি করেছিল। চারদিন ধরে পানিতে ডুবে রয়েছে ঘর। সেখানে রান্না বান্না কিছুই করা যাচ্ছে না। জলাবদ্ধতায় খুব কষ্ট হচ্ছে তাদের। মোহাম্মদ ভূট্রো ও মনজুর আলম বলেন, এখানকার বিত্তবানদের উচিত আব্দুল করিমের নতুন করে বাড়ি নিমাণে সহায়তা করা। একে অপরের বিপদে এগিয়ে আসা খুবই দরকার। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন জনপ্রতিনিধি আব্দুল করিমের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর ও তাদের দেখতে যাননি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-