ভূমিধ্বস প্রবণ উখিয়ায় প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে পাহাড় নিধন: স্থাপনা নির্মান!

  • ভূমিধস প্রবণ উখিয়ায় পাহাড়খেকোদের রাজত্ব!

নিজস্ব প্রতিবেদক •

গবেষণা ভিত্তিক আন্তর্জাতিকভাবে প্রসিদ্ধ প্লাটফর্ম রিসার্চ স্কয়ারে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র বলছে, বাংলাদেশের অন্যতম ভূমিধসপ্রবণ এলাকা হিসেবে উচ্চ ঝুঁকিতে আছে উখিয়া উপজেলা।

ঝুঁকি থাকার পরও থামছেনা পাহাড়খেকোদের দৌরাত্ম্য, প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে অব্যাহত আছে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির কারবার কিংবা প্রতিপত্তি দেখাতে পাকা ভবন নির্মাণ।

উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের জামতলী গ্রামে পাহাড় নিধন করে বহুতল ভবন নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে পাহাড়খেকোদের স্থানীয় একটি চক্র।

এই চক্রের নেপথ্যে স্থানীয় বাসিন্দা জনৈক আলাউদ্দিন ও তার দুই ভাই, যারা পৈতৃক সম্পদের অজুহাতে প্রাকৃতিক সম্পদ প্রকাশ্যে উজাড় করছে ১০/১৫ জন রোহিঙ্গা শ্রমিক কে ব্যবহার করে।

পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধিত) আইন ২০১০ এ, সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তনকে অপরাধ উল্লেখ করে নিষেধাজ্ঞা দেয়া আছে। তবে যথাযোগ্য কারণ থাকলে পরিবেশ অধিদপ্তর কে অবহিত করে নিতে হয় ছাড়পত্র।

অভিযুক্ত আলাউদ্দিন জানান, প্রশাসনে নিজস্ব লোক থাকার কারণে পাহাড় কাটতে তার অনুমতি লাগেনা!

তিনি আরো বলেন, “আমরা জানি কি করতে হয়, আমাদের ক্ষমতা আছে তাই আমরা আমাদের জমিতে যা খুশি তাই করতে পারি। সমস্যা হলে পরে কি করা লাগে তখন দেখব।”

পৃথিবীর পেরেক খ্যাত পাহাড় নির্বিচারে ধ্বংস করা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরপ, বলছেন পরিবেশবাদী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপল এর মুখপাত্র রাশেদুল মজিদ।

তিনি বলেন, ” ক্ষমতার অপব্যবহার কিংবা ব্যক্তিগত মালিকানার কথা বলে পাহাড়খেকোরা পরিবেশকে ধ্বংস করছে, যার ফল হতে পারে ভূমিধসের মতো বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়। অনতিবিলম্বে এই অপরাধে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা উচিত।”

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপ পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, ” পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে পাহাড় রক্ষার বিকল্প নেই। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি, ছাড়পত্র ছাড়া কেউ পাহাড় কাটলে যতই ক্ষমতাধর হোক কোন ছাড় দেওয়া হবে না।”

এদিকে পাহাড়খেকোদের দৌরাত্ম্য রুখতে স্থানীয় প্রশাসন তৎপর আছে বলে জানান উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীব।

ইউএনও বলেন, ” আমরা প্রশাসনিক নজরদারি অব্যাহত রেখেছি, জিরো টলারেন্স নীতিতে পরিবেশ কিংবা পাহাড় ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান। আইন অমান্যের প্রমাণ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

চলতি বছরের মার্চ মাসে উখিয়ায় পাহাড় কাটতে গিয়ে মাটি চাপায় মারা যায় তিন রোহিঙ্গা শ্রমিক।

আরও খবর