চকরিয়া প্রতিনিধি •
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বিচ্ছিন্ন দুর্গম চিলখালি এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশীয় তৈরি ৫টি লম্বা বন্দুক, বিপুল পরিমাণ বুলেট, কার্তুজ, সেনাবাহিনীর নকল ইউনিফর্ম, অত্যাধুনিক বাইনোকুলার উদ্ধার করেছে র্যাব সদস্যরা।
এসময় ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতের কাছে অস্ত্র ভাড়াদানকারী চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চিংড়িজোনের ওই এলাকায় র্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করেন।
শনিবার বিকালে র্যাব-১৫ ক্যাম্পের গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
র্যাব গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারের চকরিয়া ও মহেশখালী উপজেলার উপকূলবর্তী বিভিন্ন চিংড়িজোন এলাকায় সশস্ত্র ডাকাত দলের তৎপরতার বিষয়টি নজরদারিতে নেন র্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের একাধিক টিম।
এরই প্রেক্ষিতে চিংড়িজোন এলাকায় অভিযানে নামে র্যাব সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে র্যাব-১৫ কক্সবাজার ক্যাম্পের একটি চৌকস দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে চকরিয়া উপজেলার চিংড়িজোনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গম চিলখালির ঘরবসতিহীন সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়ে একটি চক্র টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ডাকাত দলের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী ভাড়া দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় তাৎক্ষণিক সেখানে অভিযান পরিচালনা করেন র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর একটি চৌকস আভিযানিক দল।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, অভিযানের সময় দুষ্কৃতকারীরা সশস্ত্র অবস্থায় থাকলেও র্যাব সদস্যদের কৌশলী অবস্থানের কারণে গুলি ছোড়ার কোন সুযোগ পায়নি। এ সময় চক্রটির ৭ অস্ত্রধারী সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
পরে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটক ব্যক্তিদের ও তাদের আস্তানা তল্লাশী করে দুটি ওয়ান শুটার এক নলা বন্দুক, একটি ওয়ান শুটার কাটা রাইফেল, একটি ওয়ান শুটার রাইফেল (এলজি), একটি এয়ার রাইফেল/গান, দুই রাউন্ড মেশিনগান (এমজি) এর বুলেট, ১০ রাউন্ড রাইফেলের বুলেট, ১১ রাউন্ড ১২ বোর কার্তুজ, ৮৯ রাউন্ড এয়ার রাইফেল বল, ১টি বড় রামদা, ১ সেট সেনাবাহিনীর ভুয়া ইউনিফর্ম, ১টি বাইনোকুলার, ৮টি মোবাইল ফোন এবং ১০টি সীম কার্ড উদ্ধার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, চকরিয়া উপজেলার নলবনিয়া এলাকার মৃত সিদ্দিকের ছেলে খায়রুল আমিন (৪৩), কক্সবাজারের ঈদগাও মধ্যম শিয়াপাড়ার আবদুস সাত্তারের ছেলে মাহাবুব তৈয়ব (৬৪), লামা আজিজনগর এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে নূর ইসলাম (৫০), চকরিয়া দরগাপাড়ার মৃত ডা: আবদুল মোতালিবের ছেলে মো: আব্দুল হাসিম (৩৫), খুটাখালী মেধাকচ্ছপিয়া এলাকার আবদুস শুক্কুর এর ছেলে জুলফিকার আলী ভুট্টো (৪৮), চকরিয়া পূর্ব হাজীপাড়ার মো: হোসেনের ছেলে মো: সেলিম (২৮), খুটাখালী গর্জনতলী এলাকার মো: হোসেনের ছেলে শাহাব উদ্দিন (৩২)।
গ্রেফতারকৃত চক্রটি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা উদ্ধারকৃত এসব অস্ত্র, গোলাবারুদ, সেনাবাহিনী ইউনিফর্মের আদলে তৈরী নকল ইউনিফর্ম, দেশীয় অস্ত্র এবং অন্যান্য সামগ্রী চিংড়িজোন এলাকায় বিভিন্ন ডাকাতদলের কাছে বিক্রয় এবং ক্ষেত্র বিশেষ ভাড়ায় দিয়ে থাকে। উদ্ধারকৃত অস্ত্র-গোলাবারুদ ও অন্যান্য আলামতসহ গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে শনিবার দুপুরে চকরিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়েছে।
চকরিয়া থানার অপারেশন অফিসার এসআই রাজীব চন্দ্র সরকার বলেন, চিংড়িজোন থেকে অস্ত্র উদ্ধার ও সাতজন গ্রেফতারের ঘটনায় একটি এজাহার পাওয়া গেছে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-