তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শীর্ষ উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর ‘ব্রিকস’ জোটে বাংলাদেশের যোগদানের বিরোধিতা করে বিএনপি প্রমাণ করেছে যে, তারা দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিরও বিরোধী।
চট্টগ্রামের দেওয়ানজী পুকুর লেনের নিজ বাসভবনে আজ শনিবার (১ জুলাই) স্থানীয় সুধীজনের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
শুক্রবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য ‘অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে যোগদান আমাদের জন্য শুভকর নয়’ এ নিয়ে এক প্রশ্নে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, সাউথ আফ্রিকার জোট ‘ব্রিকস’ এর উদীয়মান অর্থনীতির শক্তিকে সবাই সমীহ করে। বাংলাদেশ এতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে তা নয়, উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে তারা ব্রিকসে যোগদানের আহ্বান জানিয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য মর্যাদার, সম্মানের এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ, সেটির স্বীকৃতি। সেখানে যোগ দিলে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সুবিধা হবে। কিন্তু মির্জা ফখরুল সাহেবরা তা চান না।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, গত কয়েক মাসে তারা বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছে, গাড়ি ভাঙচুর করেছে, বাসে আগুন দিয়েছে, চট্টগ্রামের জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ ইতিহাস-ঐতিহ্যমণ্ডিত ছবি ভাঙচুর করেছে। অর্থাৎ মির্জা ফখরুল সাহেব যতই বলুন না কেন, উনারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যেই আছেন।’
এবার অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে, ঈদযাত্রাও নির্বিঘ্ন ছিল উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, নিঃসন্দেহে আমাদের সরকার নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রেক্ষিতে এভাবে মানুষের পক্ষে ঈদ উদযাপন করা সম্ভবপর হয়েছে। আজকে দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটির বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে মানুষের কোরবানি করার সামর্থ্য বেড়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেবরা গত তিনদিন ধরে গলা ফাটিয়ে ফেলছেন, দেশের মানুষ এবার কষ্টে আছেন। রাত বারোটার পরে যারা টেলিভিশনের পর্দা গরম করেন, তাদের মধ্যে বিএনপি এবং তার মিত্ররা দেশে কোনো উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দোতারাও নয়, একতারার সুরে সবসময় বলে বেড়াচ্ছে- দেশের মানুষ ভালো নাই। আসলে উনারা ভালো নাই, কিন্তু দেশের মানুষ ভালো আছে।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সক্রিয়তা কীভাবে দেখছেন-এ প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন আমাদের দেশে হবে, আমাদের ভোটাররা কাকে ভোট দেবে সেটি তারাই ঠিক করবে। সুতরাং ভূ-রাজনীতির সাথে যুক্তরা কি করছে সেটি নিয়ে আমাদের চিন্তাও নেই, মাথাব্যথাও নেই।’
নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে, সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হয় না উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যখন সরকারে ছিল তারা ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সরকারের অধীনেই করেছিল। এখানেই বিএনপি গুলিয়ে ফেলেছে। সরকার শুধু নির্বাচন কমিশনকে ফ্যাসিলেট করবে। বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা যতই দাবি করুক না কেন, সংবিধানের এক চুলও ব্যত্যয় হবে না।
সম্প্রচারমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জাপানসহ পৃথিবীর অন্যান্য সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, ঠিক সেভাবেই আমাদের দেশে নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সেখানে যেভাবে চলতি সরকার দায়িত্ব পালন করে, একইভাবে আমাদের দেশেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। তখন সরকারের শুধু রুটিন কাজ থাকে। নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট সমস্ত দপ্তর-অধিদপ্তর ও সংস্থাগুলোর জনবল বদলি থেকে শুরু করে সবকিছুই নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত থাকে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
NTV Online
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-