বিশেষ প্রতিবেদক •
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব রাত থেকেই সেন্টমার্টিনে পড়তে শুরু করেছে। সেন্টমার্টিনের ঘাট এলাকায় বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে, সঙ্গে রয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আতঙ্কে রাত কাটিয়ে ভোর হতেই আশ্রয়কেন্দ্র থেকে অনেকে বাইরে বের হয়েছে। যদিও স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা কয়েক ফুট বেড়েছে।
বঙ্গোপসাগরের মধ্যে ৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দ্বীপটি ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের লোকসংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। ইতোমধ্যে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ঠেকাতে দ্বীপের প্রায় ১১ হাজার জনসংখ্যার মধ্যে ৩ হাজার মানুষকে টেকনাফে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকি ৮ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে আনার জন্য ইতোমধ্যে ৩টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রসহ দ্বীপের ৩৭টি হোটেল রিসোর্ট-কটেজ খালি করা হয়েছে।
রোববার (১৪ মে) ভোর থেকে সেন্টমার্টিনের দ্বীপে বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে, সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও পানির উচ্চতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত রয়েছে। বাতাস বেড়েই চলেছে। জোয়ার আসা শুরু করেছে। সাগর খুবই উত্তাল। হালকা হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। বাতাসের গতি উত্তর-পূর্ব দিক। মাঝেমাঝে দিক পরিবর্তন হচ্ছে। আতঙ্কিত হয়ে আছে দ্বীপের প্রতিটি মানুষ। দ্বীপের অধিকাংশ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে অনেকের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে গেছে। সবকিছুরই ফয়সালা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, এ মুহূর্তে সেন্টমার্টিন দ্বীপে স্বাভাবিক দিনের চাইতে দুই থেকে তিন ফুটের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আতঙ্কের কোনো কারণ নেই।
জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জেলায় সিপিপির ৮ হাজার ৬০০ জন এবং রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ২ হাজার ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। সেন্টমার্টিনে নেভি, কোস্ট গার্ড, পুলিশসহ অন্যদের মিলিয়ে ৩৭টি সরকারি স্থাপনা রয়েছে। তাই সেখানে সরকারি স্থাপনাগুলো সাইক্লোন শেল্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে। দুর্যোগকালীন সময়ের জন্য ২০ লাখ নগদ টাকা রাখা হয়েছে; যার মধ্যে ১০ লাখ টাকা উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে ৫.৯০ মেট্রিক টন চাল, ৩.৫ মেট্রিক টন টোস্ট বিস্কুট, ৩.৪ মেট্রিক টন শুকনা কেক, ১৯৪ বান্ডিল ঢেউটিন, ২০ হাজার প্যাকেট ওরস্যালাইন ও ৪০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র।
জেলায় যে ৫৭৬টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে সেগুলোতে ৫ লাখ ৫৯৯০ জন লোক রাখা যাবে। মেডিকেল দল, কোস্ট গার্ড, নৌ-বাহিনী, পুলিশ, নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক দল, স্কাউট দল, আনসার বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্হাগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-