উখিয়ায় আউশের বাম্পার ফলনের আশা!

স্টাফ রিপোর্টার, উখিয়া :


কক্সবাজারের উখিয়ার ৫টি ইউনিয়নের গ্রামের জমিতে এতদিন দুই ফসল উৎপাদন হতো, প্রথমবারের মতো এসব জমিতে আউশ ধান চাষ হয়েছে। আর প্রথমবারই আশানুরূপ ফলনে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে।

মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনালি ফসল। প্রতিটি ক্ষেতে ফলন ভালো রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে পরিপক্ক হয়ে যাবে সব ক্ষেতের ধান। পরে এসব ধান কাটবেন কৃষকরা।

কৃষকরা বলছেন, এতদিন এসব জমিতে বছরে দুই ফসল উৎপাদন হতো। এখন থেকে আমন, বোরোর ও আউশ আবাদ করবেন তারা। বছরে ঘরে তুলবেন তিন ফসল। এতে লাভবান হবেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় ৫টি ইউনিয়নে এইবার আউশধানের চাষ হয়েছে। আর ধান পাকলেই কর্তনের সাথে সাথে মাঠ দিবস পালিত হবে।

আর তাই কৃষকদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিতে গেল ২৬ জুন (বুধবার) বিকেলে মাঠ পরিদর্শন করেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ডক্টর বিমল কুমার প্রমানিক, উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিনসহ উপ-সহকারী কর্মকর্তারা। এখন থেকে প্রতি বছর জমিগুলোতে আউশ ধান লাগানোর কথা জানান তারা।

মাঠ পরিদর্শন শেষে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ডক্টর বিমল কুমার প্রমানিক বলেন, ‘এত বছর উখিয়ায় বছরে দুবার ফসল হতো। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো এসব জমিতে আউশ ধান হয়েছে। পুরো মাঠ সোনালি ফসলে রূপ নিয়েছে। এটি সবার জন্য আনন্দের খবর। কৃষকরা এখন থেকে এসব জমিতে তিনটি ফসল পাচ্ছেন। নিঃসন্দেহে এই এলাকার জন্য এই ফসল সুফল বয়ে আনার পাশাপাশি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উখিয়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ২০০ বিঘা জমির জন্য যেখানে ৫ কেজি করে ব্রি ৯৮, ৪৮, ৮৫ জাতের ধান দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ২০ কেজি করে সার এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবারের মত উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৪০ হেক্টর জমিতে আউশ আবাদ হয়েছে। ক্লাস্টার আকারে যন্ত্রের মাধ্যমে ট্রেতে বীজতলা তৈরি ও চারা রোপন করা হয়। পতিত জমিতে আউশ আবাদের নানা কার্যক্রম গ্রহণের ফলে এটি সম্ভব হয়েছে। তাই এই প্রথম ফলনও আশানুরূপ হবে ধারণা করা হচ্ছে।

উপজেলার রত্নাপালং এলাকার কৃষক মীর কাশেম বলেন, ‘প্রথমবার জমিতে আউশ ধান করেছি। আগে প্রতি বছর আমন ও বোরো চাষ করতাম। এখন থেকে আউশের চাষও করবো। আউশের মাঠ ভরে গেছে। খুবই আনন্দ লাগছে। আশা করছি, বাম্পার ফলন হবে।

উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন জানান, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও জমি যাতে পতিত না থাকে সে লক্ষ্য নিয়ে কৃষকদের আউশ চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে। তাই বোরো-আমনের মাঝামাঝি সময় বাড়তি ফসল হিসেবে উখিয়ার কৃষকরা আউশ ধান আবাদে ঝুঁকে পড়েছেন। আগে বোরো-আমনের মাঝামাঝি সময় কৃষকদের জমি পতিত ফেলে রাখলেও এখন বদলে যাবে সেই চিত্র। আউশ চাষ বাড়লে দুই ফসলি এসব জমি তিন ফসলের আওতায় আসবে।