সেন্টমার্টিনে কুকুর আতংকে পর্যটকেরা!

জসিম উদ্দিন টিপু, টেকনাফ ◑

টেকনাফ সেন্টমার্টিনে কুকুরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে আগন্তুক পর্যটক এবং দ্বীপের বাসিন্দারা। প্রায় ১০বর্গকিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট এই দ্বীপে ৫ হাজারের মতো কুকুর রয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবী। যেদ্বীপে প্রায় ১০হাজার মানুষের বসবাস সেখানে এত্ত কুকুর পর্যটক এবং স্থানীয়দের রীতিমত ভাবিয়ে তুলছেন। এসব কুকুর বেশীর ভাগই বেওয়ারিশ বলে জানাগেছে। এদিকে কুকুরের কারণে দ্বীপের অনেক অভিভাবক, ছেলে-মেয়েদের স্কুল মাদরাসায় পাঠাতেও ভয় করছেন। বেওয়ারিশ কুকুর তাদের ছেলে মেয়েদের যদি কামড় দেন। এই ভয়ে অনেকে ছেলে মেয়েদের বাড়ি থেকে বের হতে দেন না।

জানাযায়, দ্বীপের বাজার, সীবীচ এবং জেটির পার্শ্ববর্তী এলাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব বেশী রয়েছে। বিষয়টিকে পর্যটকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা পর্যটনের জন্য ক্ষতির কারণ হিসেবে দেখছেন। পর্যটকরা ভোর এবং বৈকালিন সময়ে সমুদ্রে অবাধে বিচরণ করতে পারে। সেই জন্য দ্রুত সময়ে কুকুর নিধন প্রক্রিয়া শুরুর দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দ্বীপের জনপ্রতিনিধিরা জানান,গত কয়েক বছর ধরে কুকুর নিধন প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। এই কারণে কুকুরের সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে গেছে। কুকুর নিধন কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে আতংকও বেড়েই চলছে।

মীরসরাই থেকে বেড়াতে আসা এনজিও কর্মী শাহাদত হোছাইন জানান,সেন্টমার্টিনের মত এত ছোট জায়গায় এত্ত গুলি কুকুর! যা একেবারেই অকল্পনীয়। কুকুরের জ্বালায় বীচে ঘুরাঘুরি করাটা আতংকের ব্যাপার স্যাপার। দ্বীপে বেড়াতে আসা আরেক পর্যটক, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু জানান,কুকুরে শংকিত পর্যটকরা। জীবনেও দেখিনি এত কুকুর! জনধিক বিবেচনায় তিনি কুকুর নিধনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

উত্তর বীচে ডাব বিক্রেতা মোহাম্মদ ইসমাইল জানান,গত বছর কুকুরের কামড়ে মাঝেরপাড়া এলাকার এক মুরব্বি মারা যান। বেওয়ারিশ কুকুরের কারণে উত্তর বীচে একাকী চলাচলা করা মুশকিল। তিনি পর্যটক এবং স্থানীয়দের সুবিধার্থে দ্বীপের বেওয়ারিশ কুকুর নিধনের দাবী জানান।

দ্বীপের বাসিন্দা ও হোটেল সী প্রবালের এমডি আব্দুল মালেক জানান, বেওয়ারিশ কুকুরের কারণে দ্বীপের মানুষ আতংকে আছে। প্রবালদ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও আতংক নিয়ে চলাফেরা করছেন। পর্যটনের ভর মৌসুমে তিনি জনস্বার্থে কুকুর নিধনের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুর আহমদ জানান, দ্বীপে প্রায় ৫ হাজারেরও বেশী বেওয়ারিশ কুকুর রয়েছে। এসব কুকুরের কারণে পযর্টকসহ স্থানীয়রা রীতিমত অতংকে রয়েছে।

তিনি বিষয়টি জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্টিত সভায় একাধিকবার উত্তাপন করেছেন জানিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের বাঁধার কারণে কুকুর নিধন কর্মসূচী বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছেনা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান,আইনী জটিলতার কারণে দ্বীপের বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করা যাচ্ছেনা। তবে তিনি পর্যটক এবং স্থানীয়দের স্বার্থে বিকল্প ব্যবস্থাপনার কথা জানান। এই বিষয়ে জানতে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নুরুল আমিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কুকুর নিধনের বিষয়ে পরিবেশের কোন বাধা নেই বলে জানান।