লিবিয়ায় মানবপাচারকারীদের হাতে নিহত ২৩ বাংলাদেশির পরিচয় মিলেছে

অনলাইন ডেস্ক ◑  কাজের সন্ধানে সুদূর লিবিয়ায় গিয়ে পাচারকারীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হতে হল ২৬ জন বাংলাদেশি নাগরিককে। তাদের গুলি করে মারা হয়েছে। লিবিয়ায় এই গণহত্যায় মোট মৃত ৩০ জন। বাকি চার ন আফ্রিকান।

বিবিসি, আলজাজিরা, এএফপি সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাংলাদেশ তোলপাড়। করোনাভাইরাস সংক্রমণে এমনিতেই পরিস্থিতি করুণ। তার মাঝে এসেছে ২৬ জন নাগরিকের মৃত্যুর খবর।

ইতিমধ্যে নিহত ২৬ বাংলাদেশির মধ্যে ২৩ জনের পরিচয় জানা গেছে। মানব পাচারকারী চক্রের হামলায় আহত ১১ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ২৩ জনের পরিচয়।

শুক্রবার দিবাগত রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বার্তায় নিহতদের এই পরিচয় প্রকাশ করে। নিহত অপর তিন জনের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নিহত সম্ভাব্য ২৩ বাংলাদেশি হলেন, মাদারীপুর রাজৈরের বিদ্যানন্দীর জুয়েল ও মানিক, টেকেরহাটের আসাদুল, আয়নাল মোল্লা, মাদারীপুর সদরের জাকির হোসেন, জুয়েল-২, রাজৈরের টেকেরহাটের মনির, ইশবপুরের সজীব ও শাহীন, মাদারীপুর সদরের ফিরোজ, দুধখালীর শামীম।

এদিকে নিহতের তালিকায় আরও আছেন ঢাকার আরফান, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের রহিম, ভৈরবের রাজন ও শাকিল, শ্রীনগর ভৈরবের সাকিব মিয়া, রসুলপুর ভৈরবের আকাশ, ভৈরবের সোহাগ ও মো. আলী, গোপালগঞ্জের সুজন ও কামরুল, যশোরের রাকিবুল, মাগুরার নারায়ণপুরের লাল চান্দ।

আহত ১২ জনের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ফরিদপুরের ভাঙ্গার দুলকান্দি গ্রামের মো. সাজিদ (পেটে গুলিবিদ্ধ), কিশোরগঞ্জের ভৈরবের শম্ভুপুর গ্রামের মো. জানু মিয়া (পেটে গুলিবিদ্ধ), মাদারীপুর সদরের তীরবাগদি গ্রামের ফিরোজ বেপারি (হাঁটুতে গুলিবিদ্ধ), চুয়াডাঙ্গার বাপ্পী (মাথায় গুলিবিদ্ধ), গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বামনডাঙ্গা বাড়ির ওমর শেখ (হাতে ও দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ), ভৈরবের জগন্নাথপুর গ্রামের মো. সজল মিয়া (দুই হাতে মারাত্মকভাবে জখম ও মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন)।

এছাড়া বিভিন্নভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ত্রিপোলি মেডিক্যাল সেন্টারের সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মাগুড়ার মহেশপুরের বিনোদপুরের নারায়ণপুরের মো. তরিকুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার বেলগাছির খেজুরতলার মো. বকুল হোসাইন, মাদারীপুরের রাজৈরের কদমবাড়ির মো. আলী, কিশোরগঞ্জের ভৈরবের সখিপুরের মওটুলীর সোহাগ আহমেদ, মাদারীপুরের রাজৈরের ইশবপুরের মো. সম্রাট খালাসী।

আহতদের মধ্যে মাদারীপুরের সায়েদুল ইসলাম লিবিয়ার একজন নাগরিকের হেফাজতে রয়েছেন।

আলজাজিরা ও রয়টার্সের খবর, লিবিয়ার মানব পাচারকারী এক ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা এই অভিবাসীদের গুলি করে খুন করে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই পাচারকারীর মৃত্যু হয় আগে। বদলা নিতে মৃতের আত্মীয়রা ৩০ জনকে খুন করে। তবে কি কারণে ওই মানব পাচারকারীর মৃত্যু হয়েছে সেটা পরিষ্কার নয়।

লিবিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়, মিজদাহ শহরে এই খুন সংঘটিত হয়েছে। গুলিতে জখম হয়েছেন ১১ জন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে।