মহেশখালীতে আত্মসমর্পণের অপেক্ষায় শীর্ষ জলদস্যু,অস্ত্রের কারিগর,ডাকাত সহ শতাধিক সন্ত্রাসী

বিশেষ প্রতিবেদক •

কক্সবাজারের মহেশখালি অঞ্চলে কয়েক বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন পাওয়ার প্ল্যান্ট, এলএনজি টার্মিনাল,গ্যাস পাইপ লাইন,গভীর সমুদ্র বন্দরের মত বড় ধরণের মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছে। আর এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের সুবিধার্থে সরকার ওই এলাকাকে দস্যুমুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছে এবং শীর্ষ জলদস্যু,অস্ত্রের কারিগর,ডাকাত সহ সন্ত্রাসীরাও ঐ অঞ্চলে দস্যুবৃত্তি ত্যাগ করার কথা চিন্তা করেছে।

এরই ফলশ্রুতিতে মহেশখালীর হোয়ানকের কালাগাজী পাড়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী আইয়ুব বাহিনীর প্রধান আইয়ুব আলী ও তার ৩ সহযোগী সহ আত্মসমর্পণের উদ্দ্যেশ্য সেইফ হোমে চলে গেছে।

এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে মহেশখালীর কালারমারছড়ার মোহাম্মদ শাহ ঘোনা এলাকার জিয়া বাহিনীর জিয়াউর রহমান, কালা জাহাঙ্গীর, মোজাম্মেল, সিরাজদ্দৌলা,বড়মহেশখালীর দেবাঙ্গা পাড়ার মাহমুদুল্লাহ সহ অন্তত শতাধিক সন্ত্রাসীকে সেইফ হোমে নিয়ে গিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

চলতি নভেম্বর মাসে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে।

জানা গেছে,উপকূলে দাপিয়ে বেড়ানো ভয়ঙ্কর লোকদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে বঙ্গোপসাগরে জেলে এবং স্থলে লবণ চাষীরা তাদের কাছে জিম্মি ছিল। যাদের কারণে যুগ যুগ ধরে মহেশখালীর কালারমারছড়া সহ আশপাশের এলাকা অশান্ত থাকতো। গ্রুপিংয়ের কবলে পড়ে ঘটেছে অসংখ্য খুনের ঘটনা। ঝরেছে লাশ। জলদস্যুতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের খেসারত হিসেবে বছরের পর বছর ফেরারী জীবন কেটেছে তাদের।হেফাজতে থাকা তারা জীবনে আর অপরাধ করবে না বলে নিজের মাতৃভূমির মাটি ছুঁয়ে শপথ করেছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া ও পেকুয়ার অস্ত্রের কারিগর ও শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসীদের টার্গেট করে এবারের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান।

গেলবার জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যারা আত্মসমর্পণের বাইরে ছিল তাদেরও আসার সুযোগ রয়েছে। দুই শতাধিক অস্ত্রের কারিগর, সন্ত্রাসী ও জলদস্যুর সাথে যোগাযোগ হয়েছে। সেখান থেকে দেড়শতাধিক লোক আত্মসমর্পনের আওতায় আসতে পারে।

সূত্রে আরও জানা গেছে, ইতিমধ্যে সেফহোমে আনা হয়েছে প্রায় ১০০ জনের মতো অস্ত্রের কারিগর, শীর্ষ ডাকাত, সন্ত্রাসী ও জলদস্যুকে।

যাদের মধ্যে রয়েছে, আলোচিত জিয়া বাহিনীর প্রধান জিয়াউর রহমান জিয়া, তার বাহিনীর সদস্য মানিক, আয়াতুল্লাহ, আব্দুস শুকুর, সিরাজ মিয়া, একরাম ও বশিরসহ অন্তত ১৫ জন।

এছাড়া কালা জাহাঙ্গীর বাহিনীর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য আবুল, সোনা মিয়া, জমির উদ্দীনসহ প্রায় ১৫ জন, নুনাছড়ির মাহমুদুল্লাহ বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ আলী, সেকেন্ড ইন কমান্ড বদাইয়াসহ ১৫ জন, ঝাপুয়ার সিরাজ বাহিনীর প্রধান সিরাজউদ্দৌল্লাহ, নলবিলার মুজিব বাহিনীর প্রধান মজিবুর রহমান প্রকাশ শেখ মুজিব এবং কুতুবদিয়ার লেমশীখালীর কালু বাহিনীর প্রধান মো. কালু প্রকাশ গুরা কালুসহ তার বাহিনীর ১৫/২০ জন।

এ ব্যাপারে মহেশখালীর এক জনপ্রতিনিধি জানান,যারা দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য আত্মসমর্পণ করেছে, তাদেরকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। যাতে করে তারা কোনভাবে আর ওই ভুল জগতে ফিরে না যায়।