পেকুয়ায় প্রভাবশালীদের দখলে কহলখালী খাল

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের পেকুয়ার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কহলখালী খাল দখল করে গড়ে তুলেছে অর্ধশতাধিক স্থাপনা। পেকুয়ার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র পেকুয়া আলহাজ্ব কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের পাশ ঘেঁষে এ খালের অবস্থান হওয়াতে অবৈধ দখল বেড়েছে বহুগুণ। এছাড়া অভিনব কায়দায় ময়লা-আবর্জনা ফেলে প্রতিনিয়ত ভরাট করা হচ্ছে জন গুরুত্বপূর্ণ খালটি। এতে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে প্রাণ হারাতে বসেছে কহলখালী খাল।

সরেজমিনে দেখা যায়, পেকুয়া উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র ‘কবির আহমদ চৌধুরী বাজার’ লাগোয়া কহলখালী খালের পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। অর্ধশতাধিক স্থাপনার অংশ বর্ধিত করা হয়েছে খালের উপর। এস ডি সিটি সেন্টার নামের একটি বাণিজ্যিক মার্কেটের প্রবেশপথ ও গাড়ী পার্কিং তৈরি করা হয়েছে কহলখালী খালের প্রায় অর্ধেক অংশ দখল করে।

পেকুয়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, মূলত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের স্থাপনা বর্ধিত করতে খাল দখল করে চলেছে। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এ অবৈধ খাল দখল চলছে বলে, কেউ এ অনিয়মের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন না।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিয়মিত বর্জ্য ফেলার কারণে এ খালের পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এ খাল থেকে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। অথচ বোরো মৌসুমে এই খালের পানি দিয়ে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের অন্তত ৪০০ একর জমিতে পানি সেচ দেওয়া হয়। এছাড়া খালটি দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে বর্ষায় বৃষ্টির পানি ঠিকমতো খাল হয়ে নদীতে নামতে পারে না। এতে প্রায়শই বাজারে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

পেকুয়া সদর ইউনিয়নের বাইম্যাখালী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ শাহাজাহান ও আনছার উদ্দিন বলেন, খালটি ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ায় বিগত কয়েকটি বর্ষায় পেকুয়া সদরে বন্যা দেখা দেয়। এছাড়া বাজারের বর্জ্য খালের পানি দূষিত হয়ে পড়ায় আশেপাশের এলাকার বাসিন্দাদের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

এদিকে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, দখল-দূষণের কারণে চোখের সামনে মরতে বসলেও খালটি বাঁচাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন। প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলের ফলে বর্তমানে সংকীর্ণ নালায় পরিণত হয়েছে জনগুরুত্বপূর্ণ খালটি।

পেকুয়া বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ রিদুয়ান ও এনামুল করিম বলেন, কহলখালী খাল দখল করে গড়ে তোলা বহুতল ভবন উচ্ছেদ না করলে খালটি বাঁচানো সম্ভব হবে না। তাই খালটি উদ্ধার করতে প্রথমে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে।

পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ বলেন, চার বছর পূর্বে কহলখালী খাল খনন করা হয়েছিল। কিন্তু অবৈধ দখলবাজরা অভিনব পন্থায় এ খাল দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। তাই খালটি দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আর ভরাট হওয়া অংশে নির্বিঘ্নে স্থাপনা তৈরি করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবউল করিম বলেন, শীঘ্রই নকশা দেখে কহলখালী খাল পরিমাপ করা হবে। এতে অবৈধ দখলদাররা চিহ্নিত হবে। এরপর অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।