নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা পাচ্ছেন ১৬শ মানুষ

মুফিজুর রহমান, নাইক্ষ্যংছড়ি ◑
প্রকৃত কর্মহীন, অসহায় দরিদ্রদের সরকারী মানবিক সহায়তা তালিকায় আনা হবে। কোন অবস্থাতেই মুখ দেখে বা কারো ষড়যন্ত্রের চাপে অন্যায়ভাবে কাউকে সেবার আওতায় আনা হবেনা বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন।

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারী মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের তালিকা তৈরীকালে এক শ্রেণীর মানুষ ‘ষড়যন্ত্র’ করছে অভিযোগ করে মঙ্গলবার (১২মে) তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

জানা গেছে, দেশে মহামারী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর সারাদেশের ন্যায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ইউনিয়নের মানুষও চরম কষ্টে দিনযাপন করছে। এই অবস্থায় সরকারী বরাদ্দের ৬ষ্ট দফার ত্রাণ সামগ্রী ইতিমধ্যে বিতরণ শেষ হয়েছে সদর ইউনিয়নে।

এদিকে করোনা ভাইরাস বিস্তার লাভ করায় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের পরিসর বাড়ানো হয়েছে সারাদেশে। এরঅংশ হিসেবে নাইক্ষ্যংছড়িতে চলছে নির্ধারিত ছকে তালিকা তৈরীর কাজ। এর অংশ হিসেবে ডিজিটাল সফটওয়ারে ১হাজার ৬শ উপকারভোগীর তালিকা প্রেরণের টার্গেট নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বাররা।

জানতে চাইলে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ছৈয়দ আলম বলেন- স্ব স্ব ওয়ার্ডের মেম্বারদের তৈরী করা তালিকা অনলাইন ভিত্তিক ডাটাব্যাজে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সার্ভার সমস্যার কারনে কাজে কিছুটা সমস্যা তৈরী হচ্ছে। এখন তালিকার সফটকপি পাঠানো হবে।

এদিকে উপকারভোগীর তালিকা তৈরীর স্বচ্ছতা কতটুকু মানছেন জানতে চাইলে সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফয়েজ আহমদ বলেন- যারা করোনাকালে সংকটে পড়েছেন তেমন ২২০জনের তালিকা তিনি তৈরী করেছেন। আর এই তালিকা তৈরী করতে চেয়ারম্যান বা এলাকার কারো চাপে না পড়লেও বাইরের একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবী করেন তিনি।

অন্যদিকে ১,২,৩নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার রাশেদা বেগম ও ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার লায়লা বেগম বলেন- কারো চাপে পড়ে তারা তালিকা করেননি। এলাকার মুরব্বী, সচেতন নাগরিকদের কাছ থেকে যাদের নাম এসেছে তাদের অন্তভর্ূক্ত করা হয়েছে। এই ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানও তালিকা তৈরীর কাজে হস্তক্ষেপ করেননি।

৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার সাবের হোসেন জানান- দুর্ঘটনাজনিত কারনে তিনি অসুস্থ্য থাকায় এলাকার সংশ্লিষ্ট মহিলা মেম্বারের মাধ্যমে উপকারভোগীদের তালিকা তৈরী করা হয়েছে। সুস্থ্যতাবোধ করার পর তিনি আরো ৩৫-৩৫জনের নাম জমা দিয়েছেন।

জানতে চাইলে ১নং নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন বলেন- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পার্বত্যমন্ত্রীর নির্দেশ প্রকৃত অসহায়রা যেন তালিকায় আসে।

এছাড়া কে আমাকে ভোট দেয়নি, বা কে কোন দল করে সেটি মুখ্য বিষয় নয়, করোনা পরিস্থিতির কারনে কার ঘরে রান্না হচ্ছেনা, কে অভাবে আছেন? তেমন অসহায় মানুষদের তালিকায় অন্তভর্ূক্ত করতে মেম্বারদের পরামর্শ দিয়েছেন। কেউ একান্ত নিজের স্বার্থের জন্য ষড়যন্ত্র করলে তা হবে অত্যন্ত দু:খজনক।

এই বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন কচি বলেন- চেয়ারম্যান-মেম্বাররা তালিকা করেছেন। তাই কেউ কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার কথা নয়। তবে যে তালিকা করা হয়েছে তা স্বচ্ছতার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাচাই বাচাই করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন- সদর ইউনিয়নে তালিকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সার্ভার সমস্যার কথা শুনেছি। এই বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপের পর টার্গেটের তালিকা জমা নেওয়া হচ্ছে।