দুর্গাপূজা উপলক্ষে চাঙ্গা পর্যটন ব্যবসা

ডেস্ক রিপোর্ট – দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটিতে হঠাৎ করে বেড়েছে পর্যটকের আগমন। মৌসুমের শুরুতে জমজমাট ব্যবসার হাতছানিতে খুশি পর্যটন ব্যবসায়িরা। যে যার অবস্থান হতে পর্যটকদের সেবা দিতে চেষ্টা করছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল শুক্রবারে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকতে ঢল নেমেছিল পর্যটকদের। অনেক দিন অপেক্ষার পর এ বছরের এটিই ভরপুর দিন। এমন ব্যবসা আগামি ১ সপ্তাহ থাকবে বলে মনে করেন ব্যবসায়িরা। পর্যটকরে আগমন হলেও হোটেলের কক্ষ ভাড়া তেমন বাড়েনি বলে দাবি ব্যবসায়িদের। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে অনেকে কম দামে রুম বিক্রি করছেন এমনটাই দাবি তাদের।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগাম বুকিং হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস, কটেজসহ আবাসনস্থল। তবে তাও দাম কম। তবুও লোকজন আসছে এটাই বড় কথা। শুধু হোটেল পর্যটন স্পট ইনানী, সেন্টমার্টিন, হিমছড়ি, সোনাদিয়া, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, টেকনাফের মাথিনের কূপ, কদুম গুহা, রামুর রামকোট, ১শ ফুট সিংহশয্যা বৌদ্ধমূর্তি দেখতেও আগামি কয়েকদিন ভীড় জমাবেন পর্যটকরা। সমান তালে জমার সম্ভাবনা রয়েছে বার্মিজ মার্কেট ও শুটকী মহাল। গতকাল বিকেলে সৈকতে গিয়ে দেখা যায় বালিয়াডিতে বসে থাকা আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা। অনেকে ঢেউয়ের সান্নিধ্য পেতে গোসলে নেমেছে। স্থানীয় পর্যটকরা বীচ চেয়ার কিংবা বালিতে
বসে সুখ-দুঃখের অনুভূতি শেয়ার করছেন। আবার কেউ হাটছেন কলাতলি বীচ থেকে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত। সড়কের পাশে অস্থায়ী ভাজা মাছের পালকি দোকানে ভীড় জমতে দেখা গেছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মতে, ২০০০ সালের শুরু থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সময়ে থার্টিফাস্ট নাইট, ইংরেজি বর্ষকে বিদায়-বরণ ও জানুয়ারির শীতকালিন ছুটির অবকাশ যাপনে কক্সবাজার আসতো লাখ লাখ পর্যটক। কিন্তু রামু ট্রাজেডির পর এ নিয়ম পাল্টে যায়। নানা আশংকায় তখন থেকে থার্টিফাস্ট নাইট পালনে ধরাবাধা নিয়ম বেধে দেয় প্রশাসন। মৌসুমের এ সময়টাই তাই আগের মতো আর জমে না। কিন্তু ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ইস্যুর পর হতে সারা বছরই দেশী-বিদেশী সাংবাদিক, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারি, সরকারি নানা পর্যাযয়ের কর্মকর্তা মিলে সরবই থাকে পর্যটন জোনের সকল ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান। অনেক গেস্ট হাউস ও ফ্লাট পুরো মাসের জন্য বুকিং নিয়ে অফিস কার্যক্রম চালাচ্ছে এনজিও প্রতিষ্ঠান।

হোটেল গুলো কমবেশি নিত্যদিন ব্যবসা করলেও বেশিরভাগ কক্ষ খালি থাকত। তবে, গতকাল থেকে দূর্গাপূজা ও সপ্তাহিক ছুটিসহ ভিন্ন ছুটি এক হওয়ার পর পর্যটকে ভরে উঠছে কক্সবাজার। চলতি সপ্তাহে অন্তত কয়েক কোটি টাকা ব্যবসা হবে এমনটাই আশা করছেন ব্যবসায়িরা।

এদিকে গতকাল পর্যটকবাহি অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে পড়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া, ঈদগাঁও, লিংকরোড ও বাস টার্মিনাল এলাকায় যানজট বৃদ্ধির কারণে ভোগান্তিতে পড়ে পর্যটকসহ সাধারণ যাত্রীরা। সন্ধ্যার দিকে কলাতলি থেকে শহরে প্রবেশ পথে যানজট ছিল অন্যতম ভোগান্তির কারন। সে সময় সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থা দূর্বল থাকায় ১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে ১ ঘন্টা লেগে যায়। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িদের আশা এবারের দূর্গাপূজার ছুটিতে এবং দশমীর তথা বির্সজনের দিন পর্যন্ত পর্যটকের আগমন বাড়তে থাকবে এবং পূরো সপ্তাহজুড়ে চলবে সমানতালে ব্যবসা।