ট্যুরিস্ট কমিউনিটি পুলিশিং সেক্রেটারি হলেন কক্সবাজারের ‘প্রথম ইয়াবা মামলার আসামি’

পূর্বকোণ ◑
কক্সবাজার শহরে সর্বপ্রথম ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে আটক এবং প্রথম ইয়াবা মামলার আসামি আবুল মনসুরকে ট্যুরিস্ট কমিউনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ! ২০০৭ সালের দিকে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশ ইয়াবাসহ তাকে আটক করেছিল। এরপর বছরখানেক কারাগারেও ছিলেন তিনি।

বর্তমানে ইয়াবা মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি মনছুর। ২০১৯ সালের ২৭ মে জি. আর ২১২/০৭ ও এস.টি ২৭৭/০৭ মামলায় কক্সবাজার যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে তাকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকার অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। মাদকদ্রব্য আইন ১৯৯০ এর ১৯(১) ধারায় ৯(খ) ধারায় অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে এই সাজা প্রদান করা হয়। ২০১৯ সালের মাঝখানে তিনি ফের কারাগারেও যান এই সাজা মাথায় নিয়ে। ইয়াবার ঘটনায় সাজা কেটে সম্প্রতি কারাগার থেকে বের হয়েছেন তিনি। এরপরপরই কক্সবাজার ট্যুরিস্ট কমিউনিটি পুলিশিং মেরিন ড্রাইভ এলাকার কার্যকরি কমিটির সাধারণ সম্পাদক হন মনছুর। এমনকি ২০১৭ সালে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ কলাতলী বে ভিউ হোটেল থেকে মনসুরের ভাই আবছারকেও আটক করেছিল পুলিশ।

সোমবার (২ মার্চ) সকালে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যালয়ে উক্ত কমিটির অনুমোদন দেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান। কলাতলী হোটেল জাফরান ও জামান রেস্টুরেন্টের স্বত্তাধিকারি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করা হয়েছে আবুল মনসুরকে। তিনি কক্সবাজার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কলাতলী এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে।

কলাতলির পর্যটন এলাকার আইনশৃংখলার উন্নয়ন, পর্যটকদের হয়রানীমুক্ত সেবা নিশ্চিতকরণ, বীচ ক্লিনিংসহ সার্বিক সহযোগিতায় উক্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে। কমিটিতে কলাতলি মেরিনড্রাইভ হোটেল মালিক এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক মুকিম খাঁনকে সভাপতি এবং আবুল মনুসরকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৫ সদস্যের কার্যকরি কমিটি গঠন করা হয় সোমবার (২ মার্চ)। এদিকে পুলিশের মতো একটি বাহিনীর গঠন করা কমিটিতে একজন চিহ্নিত ও সাজাপ্রাপ্ত ইয়াবা কারবারিকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়ে আসায় বিভিন্ন জায়গায় চলছে আলোচনা সমালোচনা। অনেকেই বলছেন; নিজেকে বাঁচানোর জন্য এবং ইয়াবার সংশ্লিষ্টতা মোচনের জন্য কৌশলে তিনি ট্যুরিস্ট কমিউনিটি পুলিশিং এর সাধারণ সম্পাদক হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে আবুল মনসুরের মঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি। এতে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি ।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, সোমবার (২ মার্চ) ট্যুরিস্ট কমিউনিটি পুলিশিং মেরিন ড্রাইভ এলাকার কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিউনিটি পুলিশিং এর যা কাজ তারা তা করবে। তবে ইয়াবা ব্যবসায়ী বা মামলার আসামি কমিটিতে থাকার বিষয়টি আমি অবগত নই। যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে বাদ দেয়া হবে। কারণ কোনো ইয়াবা কারবারি বা অপরাধীর জায়গা নেই কমিউনিটি পুলিশিং এ। আবুল মনসুরের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।