করোনা প্রাদুর্ভাবে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিশেষ সংকেত ও কোড

অনলাইন ডেস্ক ◑ করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে অপ্রতিরোধ্য ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে পাচার হচ্ছে এ মরণ নেশা। এসব চালানের হোতাদের পরিচয় গোপন রাখতে মাদক ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করছে বিশেষ সংকেত ও কোড। যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করছে অন্যজনের আইডি দিয়ে নেওয়া মোবাইল সিম। এতে করে চালানের হোতাদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

করোনা প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের অপ্রতিরোধ্যে তথ্য পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে চট্টগ্রাম পুলিশ প্রশাসন। জোরদার করেছে তৎপরতা। ফলে বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে সর্বাধিক ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মাদক ব্যবসায়ীদের সক্রিয়তার খবর পেয়ে প্রত্যেক থানা পুলিশকে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে গত এক মাসে অসংখ্য অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে কক্সবাজার থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করার সময় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা জব্দ করা হয়।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি ইয়াবা পরিবহন হচ্ছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে। স্বাভাবিক সময়ে এ মহাসড়কে প্রশাসনের তৎপরতা থাকে বেশি। তাই গ্রেফতার হওয়ার শঙ্কা থাকে বেশি। করোনা পরিস্থিতি প্রশাসন খুব একটা নজরদারি রাখছে না। তাই মাদক কারবারিরা এটাকে সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে নিয়েছে। অনেক মাদক মাফিয়া বড় বড় ইয়াবার চালান নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মজুদও করছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে প্রশাসনের শিথিলতার সুযোগে বিগত যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ইয়াবা যাচ্ছে কক্সবাজার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তারা নিত্যনতুন কৌশলে কক্সবাজার থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে ইয়াবার চালান। ইয়াবা মাফিয়ারা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে ব্যবহার করছে কিছু সংকেত ও কোড। তারা চালানের সঙ্গে একটি বিশেষ সংকেত ও কোড বলে দেয় বাহককে। একই সঙ্গে দেওয়া হয় একটি মোবাইল নম্বর। বাহক নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে ইয়াবা মাফিয়াদের দেওয়া নম্বরে ফোন করে কোড কিংবা সংকেত মিলিয়ে হস্তান্তর করে ইয়াবার চালান।

বাহকরা কখনো কাভার্ড ভ্যান, নিত্যপ্রয়োজনী পণ্যবাহী গাড়ি, সিএনজি, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট গাড়ি কিংবা পায়ে হেঁটে নিয়ে আসছে ইয়াবার চালান। যা পরবর্তীতে চট্টগ্রাম হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। গত এক মাসে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার শত শত অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব, পুলিশ এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।

পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, মে মাসে জেলা পুলিশ ১৩৬টি সফল অভিযানে ১ লাখ ৮ হাজার ৪০৭ পিস ইয়াবা জব্দ করে। গ্রেফতার করে ২১৩ জনকে। এসব অভিযানের মধ্যে ৯০ শতাংশ মাদক উদ্ধার করা হয় দক্ষিণ চট্টগ্রাম তথা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সংযুক্ত উপজেলাগুলো থেকে।