কক্সবাজারে নির্মিত হচ্ছে ৯টি মডেল মসজিদ

মাহাবুবুর রহমান :

কক্সবাজার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্বাবধানে জেলায় ৯ টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এর পেছনে ব্যায় হবে ১৪৪ কোটি টাকা। কক্সবাজারের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে এবং জেলা সদরে ২ টি সহ ৯ টি মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজের জন্য ইতি মধ্যে স্থান নির্ধারণ ও  টেন্ডার প্রকৃয়াও সম্পন্ন করা হয়েছে।

অত্যন্ত দৃস্টি নন্দন এবং সব ধরনের সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন এ সব মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ শেষ হলে গ্রামাঞ্চলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সেবা এবং পর্যটন নগরী হিসাবে কক্সবাজারের ব্যাপক সুনাম বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ঠরা।

কক্সবাজার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক ফাহমিদা বেগম জানান,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্টার পরে এটা হয়ে উঠে বিশে^র অন্যতম রাষ্ট্রয়াত্ব সেবা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্টান। মাঝ খানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কিছু সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম ছাড়া বেশি কিছু কাজ না করলেও বর্তমানে আবারো বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে জনকল্যাণ মুখি কাজের সাথে সম্পৃক্ত করেছে।

বিশেষ করে বর্তমান মহাপরিচালকের নির্দেশনায় মাঠ পর্যায়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এখন সাধারণ মানুষের কাছে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তারিধারাবাহিকতায় সারা দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণের কাজ হাতে নিয়েছে সরকার।

সারা দেশে ৫৬০ টি মডেল মসজিদের মধ্যে কক্সবাজারে হবে ৯ টি মডেল মসজিদ। প্রতিটি মসজিদ নির্মাণে ১৬ কোটি টাকার মত বাজেট ধরা হয়েছে সে হিসাবে ৯ টি মসজিদে ১৪৪ কোটি টাকা ব্যায় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের স্থানে একটি সেখানে ৬০ শকত জমির উপর এই মসজিদ হবে ইতি মধ্যে মাটি পরীক্ষা,বিল বোর্ড স্থাপন, ডিজিটাল সার্ভে সহ সর্ব শেষ টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।

এছাড়া  বাকি সব মসজিদ হবে ৪০ শতক জমির উপর নির্মাণ ব্যায় ১৬ কোটি টাকা এর মধ্যে সদর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের পাশে যে মসজিদ আছে সেখানে একটি,রামু উপজেলা মডেল মসজিদ হবে মামুন পাড়া মসজিদ ফতেঁখারকুল রামু,উখিয়া উপজেলাতে  মরিচ্যা বাজার ষ্টেশনে,টেকনাফ উপজেলাতে টেকনাফ পৌরসভা এলাকায়,চকরিয়া উপজেলাতে উপজেলা কমপ্লেক্স মসজিদ, মহেশখালী উপজেলা কমপ্লেক্স মসজিদ এবং পেকুয়া ও কুতুবদিয়াতে একই আঙ্গিকে মডেল মসজিদ হবে। ইতি মধ্যে বেশির ভাগ মসজিদের নির্মাণ কাজের টেন্ডার আহবান করা হয়েছে আর কিছু জায়গায় স্থানীয় ভাবে কিছু সমস্যা থাকলেও আমরা আসা করছি দ্রুত সব বিষয় নিস্পত্তি করে কাজ শুরু হবে। আর নির্মাণ কাজ করবে গণপূর্ত বিভাগ।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ সরওয়ার আকবর বলেন,প্রতিটি মডেল মসজিদ হবে অত্যান্ত দৃস্টি নন্দন। এটা শুধু মডেল মসজিদ নয় সাথে থাকবে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যেখানে থাকবে নারী এবং পুরুষের জন্য পৃৃথক অজু ও নামাজের ব্যবস্থা,লাইব্রেরী গবেষনাও দ্বীনি দাওয়া কার্যক্রম, পবিত্র কোরআন হেফজ খানা,শিশু শিক্ষা,অতিথি শালা, বিদেশী পর্যটকদের আবাসন, মৃত দেহ গোসলের ব্যবস্থা,হজ্জযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ,ইমামদের প্রশিক্ষণ, ইমাম মোয়াজ্জিনের আবাসন ব্যবস্থা সহ কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিস। এক কথায় এই মডেল মসজিদ হবে পূর্নঙ্গ একটি প্রতিষ্টান যেখানে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মুফতী সোলাইমান কাসেমী বলেন,আমি শুনেছি মডেল মসজিদ নির্মাণের বিষয়ে যতটুকু জেনেছি এখানে অনেক ভাল ব্যবস্থা আছে এবং খুবই আধুনিক মানের এই মসজিদ হচ্ছে। আমি মনে করি এটা বর্তমান সরকারের ভাল দিক।

টেকপাড়া জামে মসজিদের পেশ ইমাম মৌলানা মোজাম্মেল হক বলেন,সরকারের উদ্দ্যেগে মডেল মসজিদ নির্মাণের বিষয়ে জেনেছি,প্রত্যান্ত অঞ্চলে সরকারের এমন আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন মসজিদ নির্মাণ করার উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনিয়। বিশেষ করে একই স্থানে কোরআন হেফজ খানা,শিশু শিক্ষার ব্যবস্থা এবং মৃত দেহ গোসলের ব্যবস্থা থাকা এটা সত্যি মানুষের জন্য উপকারে আসবে।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম মাহফুজুর রহমান বলেণ,বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চিত্র সবারই জানা, তারিধারাবাহিকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরকার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের উপজেলা কমপ্লেক্স্রেই মডেল মসজিদ নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতি মধ্যে সব ধরনের প্রকৃয়া সম্পন্ন করা হয়েছে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এই মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ শেষ হলে একই স্থানে সব ধরনের সেবা পাবে সর্বস্থরের মানুষ।

আলাপ কালে মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন,ইসলামিক ফাউন্ডেশন যুগ যুগ ধরে শুধু মাত্র কিছু নিয়মতান্ত্রিক কাজে বাইরে কোন কাজ করত না। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর সব সেক্টরকে সাধারণ মানুষের জন্য কল্যাণের কাজে নিয়োগ করেছে। আমার সংসদিয় এলাকাতে ২ টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করার জন্য আমি প্রশাসনিক এবং জমি সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করছি আশা করি খুব দ্রুত সব কিছু ঠিক থাকলে অল্প দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

কক্সবাজার সদর -রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেণ, এক সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নাম শুনা যেত শুধু চাঁদ দেখা কমিটির সভায়। কিন্তু এখন দেশের প্রতিটি জায়গায় মসজিদ ভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রম চালু করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে সাধারণ মানুষের দৌঁড়গোড়ায় পৌঁছে গেছে। বর্তমানে প্রতিটি উপজেলায় যে মডেল মসজিদ নির্মাণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সেটা স্বাধীনতার এত বছরেও কোন সরকার চিন্তাও করেনি।

কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কন্যা তিনিও পিতার মত অসিম সাহসি টাকা কোন সমস্য না,ভাল গ্রহনযোগ্য প্রকল্পই নেওয়াটা হচ্ছে মূল কথা। তাই আমি মনে করি মডেল মসজিদ গুলো শুধু কোন আধুনিক ভবন হবে তা নয় সেখানে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে।