কক্সবাজারে তরমুজের বাম্পার ফলন দাম না থাকায় হতাশ কৃষক

মাহাবুবুর রহমান :
কক্সবাজারে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে তবে দাম না পাওয়ায় হতাশ কৃষকরা। কৃষকদের দাবী পরিবহণ সংকটের কারণে উৎপাদিত তরমুজ জেলায় এবং জেলার বাইরে বিক্রি করতে নিয়ে যেতে পারছিনা। সে কারণে তরমুজের ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছেনা। আবার স্থাসীয় পর্যায়ে বিক্রি করতে গেলেও ক্রেতা না থাকায় অল্প দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে তরমুজ।

টেকনাফ শীলখালী এলাকার নাছির উদ্দিন বলেন, আমি ৪ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলাম। অনেক কষ্ট করে চোর, ছিনতাই এমনকি পশুপাখি থেকে বাচিঁয়ে তরমুজ বড় করেছি। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে সেই তরমুজের দাম পাচ্ছিনা। গত বছর যে তরমুজ আমি মাঠে ১০০ টাকা বিক্রি করেছি সেই তরমুজ এখন ৫০ টাকা দিয়েও কেউ দিচ্ছেনা। আগের বছর অনেক পাইকারী ব্যবসায়ি মাঠে এসে তাদের গাড়ি ভাড়া সহ দিয়ে তরমুজ কিনে নিয়ে যেত। এখন কোন ব্যবসায়ি আসছেনা। অনেক পরিচিতদের খবর দিলেও তারা আসেনা। ফলে আমি নিজে কোট বাজার, উখিয়া বাজার, টেকনাফ বাজারে নিয়ে গিলে বিক্রি করছি তবুও আমার উৎপাদন খরচও উঠবে না।

চকরিয়ার শাহারবিল এলাকার কৃষক ছুরুত আলম বলেন, আমি ৭ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলাম। ফলন ও ভাল হয়েছে। তবে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে তার অর্ধেক দাম পাচ্ছিনা। আর তরমুজ উৎপাদনে বেশি খরচ হয়। এছাড়া পরিশ্রম ও বেশি। কিন্তু সব কিছু এখন লোকসানে।

গত বছর যে তরমুজ আমি মাঠে ১২০-১৫০ টাকা বিক্রি করেছি সেই তরমুজ ৫০-৬০ দিলেও কেউ দিচ্ছেনা। তাই স্থানীয়ভাবে তরমুজ বিক্রি করে কোন মতে পোষানোর চেস্টা করছি। তিনি জানান মূলত পরিবহণ সংকটের কারণে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে না। আর আমি নিজে তরমুজ নিয়ে কয়েক বাজারে গিয়েছি।

প্রতি ষ্টেশনে পুলিশ বা চেক পোস্টে যারা থাকে তাদের টাকা দিতে হয়, না হলে গাড়ী ছাড়েনা। আবার গাড়ী ভাড়া আগে যেখানে ৫০০ টাকা দিতাম যেখানে ৮০০ টাকা নিচ্ছে। তার উপর বাজারে গিয়ে দেখা যাচ্ছে ক্রেতা নেই। মুলত রাস্তায় মানুষ না থাকার কারণে বাজারে ক্রেতা নেই। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ আবুল কাশেম বলেন, এটা সত্য করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের সব কিছুতের স্থবিরতা নেমে এসেছে। এর মধ্যে বেশি ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসায়িদের। আর তরমুজ সহ অনেক খাদ্য পণ্য পরিবহণে টাকা নিচ্ছে এ ধরণের অভিযোগ আমি শুনছি এটা খুবই দুঃখজনক।