উখিয়ায় মেম্বারের পুত্রকে হত্যার চেষ্টাসহ বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ

ফারুক আহমদ, উখিয়া ◑

ফারুক আহমদ, উখিয়া ◑

উখিয়ার জালিয়া পালং ইউনিয়নের বর্তমান মেম্বার শামসুল আলমের পুত্রের বাড়িতে চিহ্নিত দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাটসহ হত্যার অপচেষ্টা করেছে। এসময় প্রসূতি মা ও নবজাতক শিশু হামলাকারীর কবলে শিকার হয়েছে।

রবিবার দিবাগত রাতে পশ্চিম জুম্মা পাড়াস্হ কালা চান্দখোলা নামক স্থানে মেম্বারের পুত্র জাফর আলমের বাড়িতে ঘটনাটি সংঘটিত হয়। খবর পেয়ে জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী ও স্থানীয় মেম্বার মনিরুল ইসলামসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

জালিয়াপালং ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শামসুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, দুই পুত্র জাফর আলম (২৬) ও সৈয়দ আলম (২৩) সহ ও পুত্রবধূ ওই এলাকায় আমার নিজস্ব বসতভিটায় বসবাস করে আসছিল। ঘটনার দিন রাতে একদল সন্ত্রাসী গ্রুপ আমার ছেলেদেরকে হত্যা করার মিশন নিয়ে বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে ব্যাপক লুটপাট চালায়। শুধু তাই নয় উঠানের মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করে সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় তারা। ভাঙচুরের ঘটনায়  প্রায় ৫  লক্ষ টাকা ক্ষয়সাধন হয়েছে।

এদিকে এ প্রতিবেদক সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে স্থানীয় বহু নারী-পুরুষ ঘটনাস্থলে জমায়েত হয়। সংঘটিত ঘটনা দেখে সবাই হতবাক ও মর্মাহত হয়েছে। তারা ন্যাক্কারজনক ও বর্বরোচিত ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

মেম্বারের পুত্র জাফর আলম অভিযোগ করে বলেন পাইন্যাশিয়া গ্রামের মৃত জালাল আহমদের পুত্র নাসির উদ্দিন ও চাক কাটা গ্রামের পেটান আলী ও তার পুত্র মনজুর আলমের নেতৃত্বে ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই দিন রাতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে আমাকে হত্যা করার উর্দ্দেশ্যে রাতে বাড়িতে হানা দেয়। আমরা দুই ভাই প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে গেলেও সন্ত্রাসীরা দরজা ভেঙ্গে  বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক লুটপাট চালায়। আমার স্ত্রী সদ্য প্রসূতি  ইয়াসমিন আক্তার ও দুই মাসের নবজাতক শিশু সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে শিকার হয়। বাড়িতে বেড়াতে আসা শ্যালক বাবুল মিয়া (২৪) ও তার নববধূ কাজল বেগম (১৮)কে জিম্মি করে রাখা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ চেষ্টাকালে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তা রক্ষা পায়। এরপরও উঠানে  থাকা মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করে  সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেয়।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন (৫২) খাইরুল আমিন (২৮) ও ইব্রাহিম ( ৩০) জানান, চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে আসলে দেখা যায় দুর্বৃত্তরা জাফর আলম বাড়িটি ঘিরে রেখেছে এবং ভাঙচুর চালায়। পার্শ্ববর্তী মরিয়ম খাতুন (৩৫) নামের এক মহিলা বাঁচাও বাঁচাও বলে সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য চিৎকার দিলে সন্ত্রাসীরা তাকেও  ধাওয়া দেয়।

প্রসূতি গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, রাত ১টা থেকে প্রায় ৩টা পর্যন্ত সন্ত্রাসীরা তান্ডব লীলা চালিয়ে বীরদর্পে পাহাড়ের দিকে চলে যায়।

এ ব্যাপারে জালিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী ঘটনাটি দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে বলেন, খবর পেয়ে ভোর সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি এবং ভাঙচুরের ঘটনা দেখতে পায়।

এদিকে সংঘটিত ঘটনার ব্যাপারে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মেম্বার শামসুল আলম।